পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচ্ছেদ ] মাতামহী নিজব্যয় বলিয়া তাহার হস্তে যাহা দেওয়া হইত, তাহা হইতেই দান ধ্যান চলিত । এইস্থানে মাতামহী ঠাকুরাণীর সদাশয়তার কয়েকটি নিদর্শন দেখাই । আমার পিতা আমাকে কলিকাতায় রাখিয়া গেলে সময় সময় আমার ভয়ানক অর্থাভাব হইত ; তখন আনন্যোপায় হইয়া আমি মাতুলালয়ে যাইতাম । মামীদিগকে আমার অভাব জানাইতে সাহস করিতাম না । মাতামহী ঠাকুরাণী আমাকে এত ভালবাসিতেন যে আমি মাতুলালয়ে গেলে, রাত্রে আমাকে স্বীয় শয্যাতে লইয়া, গলা জড়াইয়া শুইতে ভালসিতেন । এই নিয়মে তিনি আমায় উনিশ বিশ বৎসর। পর্য্যন্ত রাখিয়াছিলেন। তিনি কিরূপে আমাকে আলিঙ্গন পাশে বাধিতেন। তাহা স্মরণ করিলে এখনও চক্ষে জল আসে। যাহা হউক, যে জন্য এ বিষয়টা উল্লেখ করিতেছি তাহা এই ॥-মাতামহী আমাকে আলিঙ্গনপাশে বাধিয়া শয়ন করিলে আমি রাত্রে তাহার কানে কানে আমার দারিদ্র্যের কথা বলিতাম ; তিনি গোপনে আমার কাপড়ের খুটে তাহার, নিজ ব্যয়ের টাকা হইতে হয়তো দুইটি বা চারিটি টাকা বাধিয়া দিতেন, বলিতেন, “এ কথা কারুকে বলে না, টাকার কষ্ট হলেই আমার কাছে এস।” এখন স্মকণ করিয়া লজ্জা হয়, কি স্বার্থপরতার কাজই করিতাম। আমার মাতামহী ঠাকুরাণী বড় ধর্ম্মভীরু মানুষ ছিলেন। উপহাসচুচ্ছলেও। যদি কাহাকেও কিছু দিব বলিয়া মুখ দিয়া কথা বাহির করিতেন, তাহা হইলে তাহা না দিয়া প্রসন্নমনে থাকিতে পারিতেন না ; তাহা দিতেই হইত। দুই একটা দৃষ্টান্ত দিতেছি। একবার রন্ধনশালার জন্য একটা বড় ঘটা কেনা হইল । ঘটােটা এত বড়, যে জলাশুদ্ধ নাড়াচাড়া করিতে মেয়েদের কষ্ট হয়। মাতামহী একবার জলসমেত ঘটীটী৷ তুলিতে rগিয়া বলিয়া উঠিলেন, “বাবারে । এ ঘটার একঘটা জল যদি কেউ একেবারে খেতে পারে, তবে তাকে একটাকা দিই।” আমনি জ্ঞাতিবর্গের