পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ro শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ কলিকাতা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র এবং বিদ্যাসাগর মহাশয় ও মদন মোহন তর্কালঙ্কার মহাশয়ের প্রিয় মানুষ ছিলেন। তঁহার মত-সত একটু উদার ছিল, তিনি আমার মাকে লেখাপড়া শিখাইয়াছিলেন। মা প্রায় প্রতিদিন দুপুর বেলা রামায়ণ পড়িতেন। দুপুরবেলা তিনি নিজে পড়িতেন ও আমাকে পড়িতে ও লিখিতে শিখাইতেন । সেই জন্য আমি পাঠশালে অপরাপর বালকের অপেক্ষা অধিক উন্নতি দেখাইতে লাগিলাম। ইহাতে গুরুমহাশয়ের কিছু আশ্চর্য্য বোধ হওয়াতে তিনি একদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোরে কে পড়া বলে দেয় রে ?” আমি বলিলাম, “আমার মা ।” গুরুমহাশয় বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোর মা লেখাপড়া জানে ?” উত্তর, “হা, আমার মা বেশ পড়তে পারে।” তারপর গুরুমহাশয় সন্ধান লইলেন যে আমার মা একাকিনী বাড়ীতে থাকেন, বাবা বিদেশে । একদিন গুরুমহাশয় আমার লিখিবার তালপাতে কি” লিখিয়া আমাকে দিলেন, বলিলেন, “তোর মুচুকে দিস, আর কেউ যেন দেখে না ।” আমি ভাবিলাম, সকল বালকের মধ্যে আমি ভাগ্যবান, গুরুমহাশয় আমার মাকে পত্র লিখিয়াছেন । আমি বাড়ীতে আসিয়া একগাল হাসি’। মাকে বলিলাম, “ওরে মা, গুরুমহাশয় তোকে কি লিখেচে দেখ । মা, তালপাতাটি আমার হাত হইতে লইয়া একটু পড়িয়াই গম্ভীর মূর্ত্তি ধারণ করিলেন ; পাতাটি ছিাড়িয়া টুকরা টুকরা করিয়া ফেলিয়া দিলেন। আমি তাহা আনিয়াছিলাম বলিয়া আমাকে মারিলেন, এবং তৎপর দিন হইতে আমার পাঠশালে যাওয়া বন্ধ করিলেন। সেই আমার পাঠশালে যাওয়া শেষ। তৎপর তিনি আমাকে গ্রামের নবপ্রতিষ্ঠিত হার্ডিঞ্জ মডেল স্কুলে ভর্ত্তি করিয়া দিলেন। । আর একটি ঘটনা অন্যরূপ। সে ঘটনাটি সে সময়ে আমার মনে দৃঢ়ৰূপে মুদ্রিত হওয়াতেই স্মরণ আঁছে। একবার আমার মাতুলালয়ে