পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8& শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ আমরা শেয়ালখাকীকে আমাদেরই একজন ভাবিতাম। সে সকল খেলাতেই সঙ্গে থাকিত। আমরা পাড়ার বালক বালিকাদের সঙ্গে মিশিয়া কখন কখন বনভোজনে যাইতাম। পাড়ার নিকট কোনও জঙ্গলময় স্থান পরিষ্কার করিয়া সেখানে উনান করিয়া প্রত্যেকের বাড়ী হইতে কাঠ বুটা চাল ডাল বহিয়া লইয়া যাইতাম। বালিকার রাধিত, বালকেরা হইত নিমন্ত্রিত ব্রাহ্মণ, এবং তাহাদের মা খুড়ী জেঠীরা হইতেন অতিথি। পরম সুখে বনভোজন হইত। শেয়ালখাকী আমাদের সঙ্গে সমস্ত দিন বনে থাকিত । আহবান্তে আমরা যখন বনে লুকোচুরি খেলিতাম, তখন শেয়ালখাকী বনের মধ্যে লুকাইত, আমরা খুজিয়া বাহিব করিতাম। আমরা তাহাকে খেলার সঙ্গী বলিয়া জানিতাম। শেয়ালখাকীর দুইটি কীর্ত্তি স্মরণ আছে। একবার আমরা কয়েকজন ‘বালকে পরামর্শ করিলাম যে প্রতিবেশীদের একটা পুরাতন ভাঙ্গা দালানে ঢুকিয়া পায়রা ধরিব। ঐ দালানের মধ্যে অনেক্ল পায়রা থাকিত । আমরা মধ্যে মধ্যে ঘরে ঢুকিয়া দ্বার জানালা বন্ধ করিয়া তাড়া দিয়া পায়রা ধরিতাম। কিন্তু দ্বার জানালা ভাঙ্গিয় তাহাতে এত গর্ত্ত হইয়া গিয়াছিল যে সেগুলি বন্ধ করিবার জন্য প্রায় পাঁচ-ছ হুগুন বালককে ঘরে প্রবেশ করিতে হইত। দরজা জানালার গর্ত্তে গর্ত্তে পিঠ দিয়া একএকজন বালক দাড়াইত, আর একজন পায় বাদিগকে তাড়াইয়া ধরিত। সেদিন আমাদের পাচজনের মধ্যে চারিজিন বৈ জুটিল না। আমরা আরএকটি বালক খুজিয়া বেড়াইতেছি, এমন সময়ে দেখি শেয়ালখাল্টী আসিতেছে। শেয়ালখাকীকে দেখিয়া আমরা আনন্দিত হইলাম, ভাবিলাম আর বালকের প্রয়োজন নাই, শেয়ালখা কাব্য দ্বারাই কাজ চলিবে । বলিলাম “শেয়ালখাকি ! আয় আয় পায়রা ধরিতে যাই।” শেয়ালখাকী অমনি প্রস্তুত!! আমাদের সঙ্গে চলিল। ঘরের ভিতর ঢুকিয়া এক একজন বালক এক এক ছিদ্রে পিঠ দিয়া দাড়াইল। দ্বারের নীচে -