পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓቅ.. নাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত । [ ৩য় পরিঃ করিতেছি, এমন সময়ে বাবা আসিয়া বাড়ীতে প্রবিষ্ট হইলেন। হইয়াই। জিজ্ঞাসা করিলেন, “সে পাজীটা কোথায় ?” আমার মা দুই হাত । দিয়া রান্না-ঘরের দরজার দুই কাঠ ধরিয়া পথ আগুলিয়া দাড়াইলেন, এবং বলিলেন “সে ঘরে নাই ।” আমি বুঝিলাম, বাবা যদি রান্নাঘরে প্রবেশ করিতে আসেন, মা তঁহাকে প্রবেশ করিতে দিবেন না, বাধা দিয়া রাখিবেন। কিন্তু বাবা সেদিকে আসিলেন না ; বলিলেন, “দা- খানা দাও দেখি।” মা জিজ্ঞাসা করিলেন, “দা কেন ?” বাবা রাগিয়া উঠিয়া বলিলেন, “সে কথায় কাজ কি ? দাও না।” মা দা-খানা বাহির করিয়া দিলেন। বাবা দা লইয়া বাড়ীর বাহির হইয়া গেলেন। আমি তাড়াতাড়ি আঁাচাইয়া, পিছনের দ্বারা দিয়া খান খুন্দ বন জঙ্গল পার হইয়া ভট্টচায্যি-পাড়ায় যাত্রাস্থলে গিয়া উপস্থিত হইলাম। মা আমাকে মুখে মাথায় কাপড় বাধিয়া ভিড়ের ভিতর সর্বদা থাকিতে বলিয়া দিয়াছিলেন। তদনুসারে আমি মুখে মাথায় কাপড় বাধিয়া ভিড়ের ভিত্র বেড়াইতে লাগিলাম। ক্রমে মন হইতে ভয় ভাবনা চলিয়া গেল। নিশ্চিন্ত মনে বেড়াইতেছি, রাত্রি আটটা সাড়ে আটটার সময় কে আসিয়া পিছন হইতে আমার ঘাড়ের কাপড় ধরল। আমি বলিলাম, “কে রে?” স্বপ্নেও ভাবি নাই যে, বাবা ক্ষুধানে আসিয়া। ধরিবেন। কিন্তু ফিরিয়া দেখি, বাবা। তিনি আমার পিঠে দু-ঘূষা দিয়া বলিলেন, “খবরদার কঁদতে পারবি না।” সে ঘুষা থাইয়া কান্না । গিলিয়া খাওয়া আমার পক্ষে মুস্কিল হইয়া পড়িল। কি করি, কান্না । গিলিতে লাগিলাম। বাবা সে অবস্থায় আমাকে বাড়ী লইয়া গেলেন, এবং উঠানের মধ্যে দাড় করাইয়া বলিলেন, “দাড়িয়ে থাক, নড়িসা নে, আমি আসচি।” এই বলিয়া আমাকে মারিবার জন্য যে বাঁশের ছড়ি মা যে তৎপূর্বেই সে ছড়ি পুকুরের জলে ফেলিয়া দিয়াছিলেন, তাহা ।