পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>tz७२-७१ ] নবীন ঠাকুর । *(t হাত বেড়ি রাখ ; এখনি ঘর, হ’তে বেয়া হ’য়ে যা ; নতুবা গলাধাক্কা দিয়ে বের ক’রে দেব।” আমি গিয়া কাছে দাড়াইলে আমাকে বলিলেন, “কি ভাই, নবীন ঠাকুর তোমাকে কি বলেছে, বল তাঁ।” আমি বলিলাম, “বেশী কিছু বলে নাই, সামান্য একটা কথা বলেছে, সে জন্য রাগ করছেন কেন ?” বড়দা বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “আঃ ! কি বলেছে, তাই বল না। সামান্য কি বেশী, আমি বুঝব।” তখন আমি বলিলাম, ‘ও বলেছে, ওদের সঙ্গে লাগলে আমি টিকতে পারব না।” বড়দা বলিলেন, “বলতে বাকি রেখেছে কি ? দু ঘা জুতা মারলে কি সন্তুষ্ট হ’তে ? ঐ জন্যেই লোকে তোমাদের অপমান করতে সাহস পায়।” এই বলিয়া নবীন ঠাকুরের দিকে ফিরিয়া বলিলেন, “যা, এখানকার কর্ম্ম গেল ; এখানে ত তুই টিকতে পারলিই না, তার পর গ্রামে টিকতে পারিস কি না, পরে ভাববা।” ( তাহারা আমদপুর গ্রামের জমিদার ছিলেন, ও নবীন তঁহাদের প্রজা ছিল । ) নবীন তঁহাদের গৃহ হইতে তাড়িত হইয়া গিয়া পথের ধারে বাজারে এক দোকান আশ্রয় করিল। আমি স্কুলে যাইবার জন্য বাহির হইলেই দেখিতাম, নবীন বিযঃ মুখে দোকানে বসিয়া আছে। আমার মনে মহা সংগ্রাম উপস্থিত হইল। আমি ভাবিতে লাগিলাম, আমি গরীব ব্রাহ্মণের ছেলে, এও গরীব ব্রাহ্মণ ; আমার জন্য এ ব্যক্তির কর্ম্ম যায়, এটা প্রাণে সহ্যু হয় না। অবশেষে এক দিন বড়দা কোট হইতে আসিয়া বাহিরের উঠানে বেড়াইতেছেন, এমন সময়ে নবীনের জন্য তঁহাকে অনুরোধ করিতে গেলাম। তিনি গভীর প্রকৃতির লোক ছিলেন, গায়ে পড়িয়া কথা কহিতে ভয় হইত ; সুতরাং আমি নীরবে বলি বলি করিয়া তঁহার পশ্চাতে পশ্চাতে বেড়াইতে লাগিলাম। তিনি আমাকে পশ্চাতে বেড়াইতে দেখিয়া ফিরিয়া দাড়াইলেন ; বলিলেন, “কি ভাই, আমাকে কিছু বলবে না।