পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ १ेष °द्विः হইত। তন্মধ্যে আদেশের মত লইয়া বড় তর্ক হইত। কেশব বাবু তঁহার সমুদয় কার্য্য যেরূপ ঈশ্বরাদেশ বলিয়া উপস্থিত করিতেন, এবং সকলকে ঈশ্বরাদেশ বলিয়া গ্রহণ করিতে হইবে এবং তদনুরূপ আচরণ করিতে হইবে বলিয়া উপদেশ দিতেন, তাহাতে আমার মনে ভয় হইত। যে, তঁহার সঙ্গের লোকের চিন্তার স্বাধীনতা নষ্ট হইবে। হয় তাহার আদেশ ফজে করিতে হইবে, নতুবা নিজের হাত পা বঁাধিয়া তঁহার হাতে আপনাকে দিতে হইবে। আমি কেশব বাবুকে বলিতাম, “আপনি আদেশ বলিয়া বুঝিয়া থাকেন, সেই ভাবে কাজ করিয়া যান ; আমরা আদেশ বলিয়া লইতেছি কি না, দেখিবেন না।” তিনি আমার কথার প্রতি কর্ণপাত করিতেন না। ইহা লইয়া তাহার সঙ্গে মুখে ও চিঠিপত্রে তর্ক হইত। আমি মানব চিন্তার স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ব্যগ্র হইতাম। তঁহাকে বলিতাম, “মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ত তেঁাহার সকল কাজ। ঈশ্বরাদেশ বলিয়া নির্বাহ করিয়াছেন ; কই, তিনি ত তাহা অপরের ঘাড়ে চাপাইবার চেষ্টা করেন নাই ; অন্যে সে ভাবে না লইলে তঁহাদের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করেন নাই ?” কেশব বাবু যখন আশ্রম স্থাপন করিলেন, তখন ইহাকে ঈশ্বরাদিষ্ট কার্য্য বলিয়া স্থাপন করিলেন। কেবল তাহা নহে ; ঈশ্বরের আদেশ বলিয়া গ্রহণ করিবার জন্য ব্রাহ্মদিগকে আহবান করিলেন, এবং সে ভাবে র্যাহারা গ্রহণ করিলেন না, তঁহাদের প্রতি বিরাগ প্রদৰ্শন করিতে লাগিলেন। কেহ কেহ প্রথমে ইহাকে এ ভাবে গ্রহণ করিতে পারিলেন না। অধিক কি, যত দূর স্মরণ হয়, শ্রদ্ধাস্পদ প্রতাপচন্দ্র মজুমদার মহাশয়ও প্রথমে ইহাকে এ ভাবে গ্রহণ করিলেন না । আমরা সপরিবারে আশ্রমে গেলাম, কিন্তু তিনি Indian Mirror'এ আবদ্ধ থাকাতে যাইতে পারিলেন না। তিনি ভয় পাইতে লাগিলেন যে, আশ্রমকে এরূপে ‘ঈশ্বরাদেশ’ বলিয়া ঘোষণা করিলে সমাজে-বিরোধ উৎপন্ন হইবে।