পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RR8 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ১০ম পরিঃ কেবল জল পানের সময় ধাতুনির্ম্মিত গ্লাসের পরিবর্ত্তে মাটির গ্লাস ব্যবহার করিতে লাগিলেন। ঝুলি লইয়া নিজের ভবনে ভিক্ষা মাঙ্গিতে লাগিলেন ; পরিবারস্থ ব্যক্তিগণ র্তাহাকে মুষ্টিভিক্ষা দিতে লাগিলেন। তঁহার দেখাদেখি প্রচারক মহাশয়দিগের কেহ কুকু রাধিয়া খাইতে লাগিলেন। ইহার অল্প দিন পরেই কোন্নগরের সন্নিকটে একটি বাগান লইয়া কেশব বাবু তাহার “সাধন কানন” নাম রাখিলেন, এবং নিজে প্রচারক দলের সহিত সেখানে বাস করিতে লাগিলেন। সেখানে নিজ হস্তে রাধিয়া খাওয়া, জল তোলা, বাগানের মাটি কাটা প্রভৃতি বৈরাগ্য আচরণ পূর্ণ মাত্রায় চলিতে লাগিল। তাহা লইয়া কলিকাতার যুবক ব্রাহ্ম দলে খুব হাসাহাসি চলিতে লাগিল। ফলতঃ, ইহার কিছু দিন পূর্ব হইতেই যুবক দলের উপর কেশব বাবুর প্রভাব হ্রাস হইতেছিল। ব্রাহ্ম যুবকগণের ধারণা জন্মিয়াছিল যে, তিনি এক সময়ে মহৰ্ষি দেবেন্দ্রনাথের সহিত বিবাদ করিয়া ব্রাহ্ম প্রতিনিধি সভা গঠন পূর্বক ব্রাহ্মসমাজে নিয়মতন্ত্র প্রণালী প্রবর্ত্তিত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন বটে ; কিন্তু ক্রমশঃ তঁহার নিয়মতন্ত্র প্রণালীতে বিশ্বাস চলিয়া গিয়াছে। তিনি এখন হয়ত মনে করিতেছেন যে, ধর্ম্মসমাজের কার্য্যে সাধারণের হাত না থাকিয়া ঈশ্বর প্রেরিত মহাজনের হাত থাকা কর্ত্তব্য ; এই কারণে তিনি সমাজের কার্য্যে অপরের কর্তৃত্ব স্থাপিত হইতে দিতে চান না, নিজে সর্বময় কর্ত্ত হইয়া থাকিতে চান। এই সংস্কার হৃদয়ে বদ্ধমূল হওয়াতে যুবকগণ তঁহার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া লইতে লাগিলেন। আমাদের মনের উপরে তঁহার শক্তি অনেক পরিমাণে যেন হ্রাস হইতে লাগিল । - ভারত সভা স্থাপনের পরামর্শ।-যখন ব্রাহ্মসমাজে এই সকল আন্দোলন চলিতেছে, তখন আনন্দমোহন বসু, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমি, তিন জনে আর এক পরামর্শে ব্যস্ত আছি।” আনন্দমোহন বাবু ন্ধদাত হইতে আসার পর হইতে আমরা একত্র হইলেই এই কথা উঠিত