পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

': ). নবীনচন্দ্র রায়ের মৃত্যু - 39S কিছু বলিতেন না। এতদ্ভিন্ন বোধ হয় তঁহার অপর কোনও উদ্বেগের কারণও ছিল । যাহা হউক, তিনি আমার ভবনে গুরুতর রক্তামাশয় রোগে আক্রান্ত হইয়া পড়েন। তখন খাণ্ডোয়া হইতে র্তাহার পরিজনদিগকে আনা হয় এবং তঁহার ইচ্ছানুসারে তঁহাকে নবনির্ম্মিত ভবনে স্থানান্তরিত করিয়া চিকিৎসা করা যায়। এই রোগ শয্যাতে সেই সাধু পুরুষের যে ভাব দেখিয়াছিলাম, তাহা চিরদিন মনে মুদ্রিত রহিয়াছে। যখন তিনি বুঝিতে পারিলেন যে এ যাত্রা আর বঁাচিবেন না, তখন প্রথম প্রথম দেখা গেল যে, তঁাহার পত্নী নিকটে গিয়া বসিলেই তঁহার মন আবেগে পূর্ণ হইয়া উঠে ও চক্ষে জলধারা পড়ে। বোধ হয় ভাবেন, তাহার মৃত্যুর পর তঁহার পত্নীকে কে দেখিবো। দুই তিন দিন পরে সে ভােব চলিয়া গেল, চিত্ত ও মুখ প্রশান্ত ভােব ধারণ করিল। তখন পত্নী নিকটে গিয়া কঁাদিলে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া আমার দিকে দেখাইয়া দিতেন, এবং আর সংসারের কথা শুনাইতে বারণ করিতেন । এই অবস্থায় এক দিন এক জন ব্রাহ্ম যুবক আসিয়া বলিলেন, “আপনাকে একটি গান শুনাইতে চাই ; কোন গানটি করিব ?” নবীনচন্দ্র বলিলেন, “ঐ যে দেখা যায় আনন্দ ধাম” এই গানটি করুন। সে গানটি এই,- “ ঐ যে দেখা যায় আনন্দ ধাম অপূর্ব্ব শোভন, ভবজলধির পারে, জ্যোতির্ম্ময় । শোকতাপিত জন সবে চল, সকল দুখ হবে মোচন, শান্তি পাইবে হৃদয় মাঝে, প্রেম জাগিবে অন্তরে। কত যোগীন্দ্র ঋষিমুনিগণ না জানি কি ধ্যানে মগন, স্তিমিত লোচনে কি অমৃতরাস পানে ভুলিল চরাচর । কি সুধাময় গান গাইছে। সুরগণ, বিমল বিভুগুণ বন্দনা ; কোটি চন্দ্র তারা উলসিত, নৃত্য করিছে অবিরাম !