পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

to a শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত . [ পরি ছেলে মেয়েরা যাকে ভালবাসিবে তাকেই বিবাহ করিবে। ব্রহ্ম যখন হইয়াছি, তখন আবার জাত কি ?” কাজেও সেইরূপই করিয়াছেন। উপাসনাতে র্তাহার প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল। রোগে নিতান্ত অশক্ত হইলেও প্রতি দিন ঈশ্বরোপাসনা করিতে ভুলিতেন না। এমন কি, যে রোগে তঁর প্রাণ গেল, তাহার মধ্যেও যত ক্ষণ শক্তি ছিল, অতি কষ্টে শয্যাতে উঠিয়া বসিয়া গান ও ঈশ্বরোপাসনা করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। সে সময়ে প্রায় প্রতি দিন সাধনাশ্রমের উপাসনা কালে বলিতেন, “আমাকে লইয়া আশ্রমের বারান্দাতে শোয়াও ” আমি শিলচর হইতে “প্রসন্নময়ীর অবস্থা খারাপ” এই টেলিগ্রাম পাইয়া কলিকাতায় আসিলাম। আসিয়াই ডাকিয়া বলিলাম, “দেখ, আমি আসিয়াছি।” তখন তিনি বলিলেন, “আমার মাথার কাছে বসিয়া উপাসনা কর।” মৃত্যুর পূর্ব্বে কন্যাদিগকে বলিয়াছিলেন, “আমার মৃত দেহ ঘাটে লইয়া যাইবার পূর্বে এক বার আশ্রমের উপাসনা কুটিরের বারান্দাতে শোয়াস ।” তদনুসারে তঁর শব দেহ আশ্রমের বারান্দাতে রাখিয়া প্রার্থনা করা হইয়াছিল। র্তাহার সরল পবিত্র হৃদয়ে পরস্পর বিরোধী ভাবের আশ্চর্য্য সমাবেশ দেখিয়াছি। দুর্ণীতির প্রতি র্তাহার এমনি বিরাগ ছিল যে, ওরূপ জ্বলন্ত ঘূণা প্রায় দেখা যায় না। এই বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, নিজের এক জন নিকটস্থ আত্মীয়ের কোনও গহিত অনুষ্ঠানের কথা শুনিয়া এতই বিরক্ত হইয়াছিলেন যে, সে ব্যক্তি দেখা করিতে আসিলে দেখা করিলেন না, এবং আর তঁহার সহিত দেখা করিতে আসিতে নিষেধ করিয়া দিলেন। ব্রাহ্মদের মধ্যে কেহ ঋণ করিয়া টাকা দেয় না, মিথ্যা প্রবঞ্চনা করে, বা আরও কিছু গুরুতর পাপে লিপ্ত হইয়াছে, শুনিলে ঘূণাতে অধীর হইয়া উঠিতেন। বলিতেন, “ব্রাহ্মসমাজে কি মানুষ নাই ? এই হতভাগাদিগকে কান ধরিয়া দূর করিয়া দেয় না কেন ?” অথচ যদি আবার বিশ্বাস হইত যে, কোনও স্ত্রীলোক দুর্বলতা বশতঃ পাপে পড়িয়াছে বা তাহাকে