পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৫৬-৬১ ] সহাধ্যায়ীদিগের বাটীতে মা বোনের অভাব পূরণ ৬৫ চন্দ্র প্রভৃতির কবিতার সমালোচনা করিতেন । এই সবল কারণে আমার শৈশব হইতে কবিতা লিখিবার বাতিক জাগিয়া থাকিবে । আমার দশ বৎসর বয়সের লিখিত খাতা পরে দেখিয়ছি। তাহাতে কয়েকটি কবিতা । লিখিত আছে। সেগুলি এরূপ উৎকৃষ্ট যে অতটুকু বালকের লিখিত বলিয়া বোধ হয় না । অনুমান করি, সেগুলি অন্য কোনও স্থান হইতে নকল করিয়া লইয়াছিলাম। তাহাতেও এই প্রমাণ হয় যে, নয় দশ বৎসর বয়সেও ভাল কবিতা দেখিলেই নকল করিয়া লইতাম । সহাধ্যায়ীদিগের বাটীতে গিয়া মা বোনের অভাব পূরণ। -এই সময়ের স্মরণীয় বিষয় আর একটি আছে। আমার দুইটি সহাধ্যায়ী বালকের মাতারা এই সময়ে আমার মাসীর কাজ করিয়াছিলেন। তঁহাদিগকে আমি মাসী বলিয়া ডাকিতাম ; সর্ব্বদা তীহাদেব বাড়ীতে যাইতাম ; তঁহাদের কন্যাদের সঙ্গে ভাইবোনের মত’ খেলিতাম । ইহাতে আমার জননীর ও ভগিনীর অভাব দূর হইত। ভাল জিনিস কিছু গৃহে হইলেই তাহারা আমাকে ডাকিয়া খাওয়াইতেন। পাছে আমি কুসঙ্গে পড়ি এই ভয়ে তঁহার কলেজের ছুটির দিনে আমাকে নিজেদের বাড়ীতে রাখিতেন । এই দশ এগার বৎসর বয়সের আর একটি কৌতুকজনক ঘটনা স্মরণ হয়। আমাদের কলেজের সন্নিকটের গলিতে একটি বালিকা ছিল । সে আমার সমবয়স্ক। দেখিতে যে খুব সুন্দরী ছিল তাহা নহে, কিন্তু তাহার মুখখানি আমার বেশ লাগিতা। সে তাহাদের বাড়ীর উঠানে খেলা করিত। আমি আর একটি বালকের সঙ্গে রোজ তাহাকে দেখিতে যাইতাম । সে তার মারি ভয়ে পথের বালকের সহিত বড় বেশী কথা বলিত না ; কিন্তু সে জানিত যে আমরা তাহাকে দেখিতে ও তাহার সঙ্গে কথা কহিতে ভালবাসি, তাই সে আমাদের কণ্ঠস্বর শুনিলেই বাহিরে আসিত ও এটা ওটা যাহা দিতাম! গোপনে লাইত। C