পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৫৬-৬১ ] “সোমপ্রকাশ’ ছাপাখানায় কুসঙ্গ a G. খৎ দিতেছেন। এখানে এ কথা বলা আবশ্যক যে তাহার পরে তিনি সহস্ৰ উত্তেজনা সত্ত্বেও আমার বা আমার ভগ্নীদের গায়ে আর হাত তোলেন নাই। এমন কি, আমি ব্রাহ্মসমাজে যোগ দিয়া উপবীত পরিত্যাগ করিলেও, তিনি তর্জন গৰ্জন করিয়াছেন, দন্তে দন্ত ঘর্ষণ করিয়াছেন, কিন্তু আমার গায়ে হাত দেন নাই। ইহাতেই সকলে বুঝিবেন, তঁহার অনুতাপ ও প্রতিজ্ঞা কিরূপ ঐকান্তিক ছিল। গ্রামের বাঙ্গলা স্কুলে বদলী হইয়া পিতার কলিকাতা ত্যাগ। চাপাতলায় মাতুলের দ্বিতীয় বাসা ; “সোমপ্রকাশ ছাপাখানার কর্ম্মচারীদের কদাচরণ --ইহার কিছু দিন পরেই আমার পিতা কলিকাতা বাঙ্গলা পাঠশালার কর্ম্ম হইতে বদলী হইয়া আমাদের গ্রামের হার্ডিঞ্জ মডেল বাঙ্গলা স্কুলের হেড পণ্ডিতের কর্ম্ম পাইয়া গ্রামের বাড়ীতে চলিয়া যান। তখন আমাকে সিদ্ধেশ্বর চন্দ্রের লেনে আমার মাতুল মতাশয়ের বাসাতে রাখিয়া যান। এখানে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সর্বদাই আসিতেন ; এবং আমার মাতুলের সহিত কি পরামর্শ করিতেন। পরে শুনিলাম, ‘সোমপ্রকাশ” নামে একখানি সাপ্তাহিক কাগজ বাহির হইবে, তাহার পরামর্শ চলিতেছে। ১৮৫৮ সালে সোমপ্রকাশ কাগজ বাহির হইল। বাসাতে ধূম পড়িয়া গেল। বাড়ীতেই ছাপাখানা খোলা হইল। কাগজ ছাপা ও কাগজ বিলির জন্য অনেক লোক বাসাতে থাকিতে আরম্ভ করিল। হৈ-হাই গোলমাল সমস্ত দিন ও রাত্রি ১০টা ১১টা পর্য্যন্ত। তাহার ভিতরে আমি বয়সে সর্বাপেক্ষা ছোট, আমার খাওয়া দাওয়া বা কে দেখে, পড়াশোনার প্রতিই বা কে দৃষ্টি রাখে! আমি সেই পুরুষের দলে পড়িয়া, রাধি, বাসন মাজি, এবং কোনও প্রকারে নিজের পড়াশোনা করি। তদুপরি, বাসার বয়ঃপ্রাপ্ত যুবকগণের আলাপ আচরণ কিছুই আমার মত’ বয়সের ছেলের শুনিবার ও দেখিবার উপযুক্ত নহে। সে সকল স্মরণ