পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৮-৬৯ ] যোগেন্দ্রের সহিত বাসের প্রস্তাবে মাতুলের অনুমোদন ১২৩ বিপদেব সময় কিরূপে সাহায্যদানে বিরত থাকি ? সুতরাং আমি বাবাকে সমুদয় বিবরণ লিখিয়া দিয়া ভঁাহাদের সঙ্গে জুটলাম। যোগেন্দ্রের সহিত বাস করিবার প্রস্তাবে পিতার ক্রোধ।-- বাবা এই সংবাদ পাইয়া অগ্নিসমান হইয়া উঠিলেন ; কারণ জ্ঞাতি কুটুম্ব ও গ্রামেব লোক এই সংবাদ পাইলে গোলযোগ করিবে। তিনি আমাকে ইহাদের সৃঙ্গ পরিত্যাগ করিবার জন্য আদেশ কবিয়া পত্র লিখিলেন। আমি অনুনয় বিনয় করিয়া লিখিলাম, যে-বিবাহের আমি ঘটক, সেই বিবাহ-নিবন্ধন বিবাহিত দম্পতী যখন ঘোর নির্য্যাতন ও দাবিদ্র্যের মধ্যে পড়িয়াছেন, তখন সাহায্যেব উপায় থাকিতে সাহায্য না কিবা অধর্ম্ম ; সুতরাং সেরূপ কাজ আমি করিতে পারিব না। বাবা সে যুক্তির প্রতি কর্ণপাত করিলেন না ; পবন্তু লিখিলেন যে, তাহা হইলে তিনি আয় প্রসন্নময়ীকে বাড়িতে বাখিতে পাবিবেন না, এবং আমাকে সস্ত্রীক গৃহ হইতে নিৰ্বাসিত করিবেন। মাতুলের অনুমোদন লাভ।-ষখন এইরূপ চিঠিপত্র চলিতেছে তখন একদিন বড়ামামা আমাকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। আমি চাঙ্গাড়ীপোতা গ্রামে তাহার ভবনে গিয়া তাহাব সহিত সাক্ষাৎ করিলাম। তিনি বাবার এক পত্র আমাকে দেখাইলেন। দেখিলাম, বাবা আমাকে নিরস্ত করিতে না পায়িয়া বড়ামামার শরণাপন্ন হইয়াছেন। চিঠি পড়িয়া আমি বীরভাবে সমুদয় ঘটনা মাতুলের নিকট বর্ণন কবিলাম ; কিরূপ নির্য্যাতন, কিরূপ দারিদ্র্য, কিরূপ সংগ্রাম চলিয়াছে, তাহা ভাঙ্গিয়া বলিলাম। বলিয়া তাহার উপদেশের অপেক্ষা কবিয়া রহিলাম। মাতুল মহাশয় কিছুক্ষণ ধীর গন্তীয় ভাবে চিন্তা করিয়া বলিলেন, “না, তুমি তাহাকে ত্যাগ করিতে পায় না। তুমি তাহাদিগকে বিবাহে উৎসাহ দিয়া, বিপদের সময় যদি তাহাদিগকে পরিত্যাগ কয়, তাহা হইলে অধর্ম্মেদ কাজ হইবে ; কাপুরুষতা হইবে ; আমার, ভাগিনার মত কার্য হইবে না।”