পাতা:আত্মপরিচয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এর পর থেকে বিরাটচিত্তের সঙ্গে মানবচিত্তের ঘাত-প্রতিঘাতের কথা ক্ষণে ক্ষণে আমার কবিতার মধ্যে দেখা দিতে লাগল। দুইয়ের এই সংঘাত যে কেবল আরামের, কেবল মাধুর্যের তা নয়। অশেষের দিক থেকে যে আহ্বান এসে পৌঁছয় সে তো বাঁশির ললিত সুরে নয়। তাই সেই সুরের জবাবেই আছে—

রে মােহিনী, রে নিষ্ঠুরা  ওরে রক্তলােভাতুরা
কঠোর স্বামিনী,
দিন মাের দিনু তােরে শেষে নিতে চাস হ’রে
আমার যামিনী?
জগতে সবারই আছে সংসারসীমার কাছে
কোনােখানে শেষ,
কেন আসে মর্মচ্ছেদি  সকল সমাপ্তি ভেদি
তােমার আদেশ?
বিশ্বজোড়া অন্ধকার  সকলেরি আপনার
একেলার স্থান,
কোথা হতে তারো মাঝে  বিদ্যুতের মতাে বাজে
তােমার আহ্বান?

এ আহ্বান এ তো শক্তিকেই আহ্বান; কর্মক্ষেত্রেই এর ডাক; রসসম্ভোগের কুঞ্জকাননে নয়—সেইজন্যেই এর শেষ উত্তর এই—

হবে, হবে, হবে জয়  হে দেবী, করি নে ভয়,
হব আমি জয়ী।
তােমার আহ্বানবাণী  সফল করিব রানী,
হে মহিমাময়ী।
কাঁপিবে না ক্লান্ত কর,  ভাঙিবে না কণ্ঠস্বর,
টুটিবে না বীণা,

৫১