পাতা:আত্মপরিচয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 মহাপঞ্চক। তুমি আমাদের পূজা নিতে আস নি।

 দাদাঠাকুর। আমি তােমাদের পূজা নিতে আসি নি, অপমান নিতে এসেছি।


 আমি তাে মনে করি আজ য়ুরােপে যে যুদ্ধ বেধেছে সে ঐ গুরু এসেছেন বলে। তাঁকে অনেক দিনের টাকার প্রাচীর, মানের প্রাচীর, অহংকারের প্রাচীর ভাঙতে হচ্ছে। তিনি আসবেন বলে কেউ প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু তিনি যে সমারােহ করে আসবেন তার জন্যে আয়ােজন অনেকদিন থেকে চলছিল। য়ুরােপের সুদর্শনা যে মেকি রাজা সুবর্ণের রূপ দেখে তাকেই আপন স্বামী বলে ভুল করেছিল— তাই তাে হঠাৎ আগুন জ্বলল, তাই তাে সাত রাজার লড়াই বেধে গেল— তাই তো যে ছিল রানী তাকে রথ ছেড়ে, তার সম্পদ ছেড়ে, পথের ধুলাের উপর দিয়ে হেঁটে মিলনের পথে অভিসারে যেতে হচ্ছে। এই কথাটাই ‘গীতালি’র একটি গানে আছে―

এক হাতে ওর কৃপাণ আছে
আর এক-হাতে হার।
ও যে  ভেঙেছে তাের দ্বার।
আসে নি ও ভিক্ষা নিতে,
লড়াই করে নেবে জিতে
পরানটি তােমার।
ও যে  ভেঙেছে তাের দ্বার।
মরণেরি পথ দিয়ে ওই
আসছে জীবনমাঝে
ও যে  আসছে বীরের সাজে

৬৪