পাতা:আত্মশক্তি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
“স্বদেশী সমাজ” প্রবন্ধের পরিশিষ্ট।
৬৩

হীরামুক্তার দোকান সাম্‌লাও,” তখন কি সে এই কথা লইয়া আলোচনা করিবে যে, কঙ্কণরচনার গঠনসম্বন্ধে তাহার সঙ্গে আমার মতভেদ আছে, অতএব আমার কথা কর্ণপাতের যোগ্য নহে? তোমার কঙ্কণ তুমি যেমন খুসি গড়িয়ো, তাহা লইয়া তোমাতে আমাতে হয়ত চিরদিন বাদপ্রতিবাদ চলিবে, কিন্তু আপাতত চোখ জল দিয়া ধৌত কর, তোমার হীরামুক্তার পসরা সাম্‌লাও—দস্যুর সাড়া পাওয়া গেছে এবং তুমি যখন অসাড়-অচেতন হইয়া দ্বার জুড়িয়া পড়িয়া আছ, তখন তোমার প্রাচীন ভিত্তির ‘পরে সিঁধেলের সিঁধকাটি একমুহূর্ত্ত বিশ্রাম করিতেছে না।



সফলতার সদুপায়।[১]

 ভারতবর্ষে একচ্ছত্র ইংরেজরাজত্বের প্রধান কল্যাণই এই যে, তাহা ভারতবর্ষের নানাজাতিকে এক করিয়া তুলিতেছে। ইংরেজ ইচ্ছা না করিলেও এই ঐক্যসাধন-প্রক্রিয়া আপনা-আপনি কাজ করিতে থাকিবে। নদী যদি মনেও করে যে, সে দেশকে বিভক্ত করিবে, তবু সে এক দেশের সহিত আর এক দেশের যোগসাধন করিয়া দেয়, বাণিজ্য বহন করে, তীরে তীরে হাটবাজারের সৃষ্টি করে, যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত না করিয়া থাকিতে পারে না। ঐক্যহীন দেশে এক বিদেশী


  1. প্রাইমারি শিক্ষা বাংলাদেশে যখন চার উপভাষা চালাইবার কথা হইয়াছিল, তখন এই প্রবন্ধ রচিত হয়। সম্প্রতি সে সঙ্কল্প বন্ধ হওয়াতে প্রবন্ধের স্থানে স্থানে বাদ দেওয়া গেল।