পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S3V. আদশ হিন্দী-হোটেল --তুমি ভাবলে কি হবে ? পদ্মদিদি পাস করলে তবে তো হাঁড়িতে উঠবে। ভুলে গেলে নাকি সব আইন-কানন, হাজারি দা ? হাজারি হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল। বলিল-বংশী, একটি চা করে খেয়ে নিলে হোেত না ? আছে তোড়জোড় ? বংশী বলিল-খাবে? আমি দিচ্ছি। সব ঠিক করে । ডাল চড়িয়ে গরম জল এই ঘাঁটিতে কেটে রেখো, হাতা দিয়ে। চিনি আছে, চা আনিয়ে নিচ্ছি-মনে আছে আর বছর আমাদের চা খাওয়া ? আব্দার রস করেও দেবো। এখন-আধঘণ্টার মধ্যে হাজারি ও বংশী মনের আনন্দে কলাইকরা বাটি করিয়া চা খাইতেছিল। ভূতগত খাটনির মধ্যেও ইহাতেই আনন্দ কি কম ? হাজারি একাদণ্টে অগানের দিকে চাহিয়া চিন্তিত মাখে বলিল-যেখানে যার মন টেকে, বঝলে বংশী। গোপালনগরে সন্দেবোলা রোজ ওদের মন্দিরে ঠাকুরের শেতল হয়--তার সন্দেশ, ফল কাটা, মাগের ডাল ভিজে খেতে দিত আমাকে। চা আমি করে নিতাম উননে। কিন্তু তাতে কি এমন মজা ছিল ? একা একা বসে রান্নাঘরে চা আর খাবার খেতাম, মন হ হ করতো। খেয়ে সখি ছিল না-আজ শািন্ধ চা খাচ্চি, তাই যেন কত মিলিট! } রাত হইয়াছে। স্টেশনের পল্যাটফমে একখানা গাড়ীর আওয়ািজ পাইয়া হাজারি বলিল-ও বংশী, কেন্সটনগর এলো যে! ডালে কাঁটা দিয়ে FsG一 সঙ্গে সঙ্গে গোবরা চাকর খাবার ঘর হইতে হাঁকিল-থাড কেলাস দ-থালা উত্তেজনায় হাজারির সারান্দেহ কেমন করিয়া উঠিল। কি কাজের ভিড়, কি লোকজনের হৈ-চৈ, কি ব্যস্ততা-ইহার মধ্যেই তো মজা। তা নয়, গোপালনগরের মত পাড়াগাঁ জায়গায় কুডুদের বহৎ সেকেলে নিস্তত্ব অট্টালিকার মধ্যে নিস্তব্ধ রান্নাঘরের কোণে বসিয়া কড়িকাঠ গনিতে গনিতে আর বাড়ীর পিছনের বাগানের তেতুল গাছে বাদােড় ঝোলা ডালপালার দিকে চাহিয়া চাহিয়া রান্না করা-সে। কি তাহার পোষায়! সে হইল শহরের মানষ ।