পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ Գ8 - আদশ হিন্দী-হোটেল পদ্মাঝি কিছুক্ষণ চুপ করিয়া বলিল-দােমাসের বাড়ীভাড়া বাকী ওদিকে। কাল বলেছে। অন্ততঃ একমাসের ভাড়া না দিলে৷ হৈ-চৈ বাধ্যবে। ভাড়া দেবে কোথেকে ? --দেখি। --তারপর কানাই ঠাকুরের মাইনে বাকী পাঁচ মাস। সে বলছে আর একাজ করবে না, তার কি করি ? —বঝিয়ে রাখো এই মাসটা। দেখি সামনের মাসে কি রকম হয়-- পদ্মঝি রান্নাঘরে গিয়া ঠাকুরকে বলিল-আমার ভাতটা বেড়ে দাও ঠাকুর, রাত হয়েছে অনেক, বাড়ী যাই। তারপর সে চারিদিকে চাহিয়া দেখিল। ছন্ন-ছাড়া অবস্থা, ওই বড় দশসেরী ডেকচিটা আজ তিন-চার মাস তোলা আছে—দরকার হয় না। আগে পিতলের বালতি করিয়া সরিষার তৈল আসিত, এখন আসে ছোট ভাঁড়েবালতি দরকার হয় না। এমন দরবস্থা সে কখনো দেখে নাই হােটেলের। তাহার মনটা কেমন করিয়া ওঠে।. , নানারকমে চেন্টা করিয়া এই হোটেলটা সে আর কত দ’জনে গড়িয়া ‘তুলিয়াছিল। এই হোটেলের দৌলতে যথেস্ট একদিন হইয়াছে। ফলে-নাবলী :গ্রিামের যে পাড়ায় তাহার আদি বাস ছিল, সেখানে তার ভাই এখনও আছে-- চাষবাস করিয়া খায়-আর সে এই রাণাঘাটের শহরে সোনাদানাও পরিয়া বেড়াইয়াছে একদিন-এই হোটেলের দৌলতে। এই হোটেল তার বকের পাঁজর। কিন্তু আজ বড় মস্কিলের মধ্যে পড়িতে হইয়াছে। , কোথা হইতে এক উনপাঁজরে, গাঁজাখোর আসিয়া জটিল হোটেলে-হোটেলের সােলাকসন্ধান জানিয়া লইয়া এখন তাহদেরই শিলনোড়ায় তাহদেরই দাঁতের গোড়া ভাঙিতেছে। এত যত্নের, এত সাধ-আশার জিনিসটা আজ কোথা হইতে কোথায় দাঁড়াইয়াছে! যাহার জন্য আজ হোটেলের এই দরবস্থা,- ইচ্ছা হয়। সেই কুকুরটার গলা টিপিয়া মারে, যদি বাগে পায়। তাহার উপর আবার দয়া কিসের? কতা ওই রকম ভালেমানষে সদাশিব লোক বলিয়াই তো আজ পথের কুকুর সব মাথা নাড়া দিয়া উঠিয়াছে।... দয়া!