পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ROR আদশ হিন্দী-হোটেল গাঁ সদ্ধ হয়েছে এই দশা। তা আপনি আসবেন বলেছিলেন আসন না ? ঐ দালালের ভিটেতে ঘর তুলনা কিংবা চলে আসন আমার এই রাস্তার ধারের জমি দিচ্ছি। আপনাকে । আমাদের গাঁয়ে এখন লোকের দরকার-আপনি আসন খাব ভাল ধানের জমি দেবো আপনাকে আর আম-কাঁঠালের বাগান।” কত চান ? বড় বড় আম-কাঁঠালের বাগান পড়ে রয়েছে ঘোর জংগল হয়ে পাব পাড়ায়। লোক নেই মশায়, কে ভোগ করবে-আম-কাঁঠালের বাগান ? আপনি আসন, চারখানা বড় বড় বাগান আপনাকে জমা দিয়ে দিচ্ছি। ” আমাদের গাঁয়ের মত খাদ্যসখি কোথাও পাবেন না, আর এত সস্তা! দধি বলন, ফলফলারি বলন, মাছ বলনা-সব সস্তা। হাজারি ভাবিল, জিনিস সস্তা না হইয়া উপায় কি ? কিনিবার লোক কে আছে ? একটা কথা তােহর মনে হওয়াতে সে বিহারী বািড়য্যেকে জিজ্ঞাসা করিল-গাঁয়ে লোক নেই তো জিনিসপত্তার তৈরী কয়ে কে ? এই তারি-তরকারি দধি ? বাঁড়িয্যে মশায় বলিলেন-ওই যে আপনি বঝতে পারলেন না! ভান্দর লোক মরে হেজে যাচ্ছে কিন্তু চাষীলোকের বাড়বাড়ন্ত খব। সিমলে গাঁয়ের বাইরে মাঠের মধ্যে দেখবেন একশো ঘর চাষী কাওরী আর বনোর বাস। ওদের মধ্যে মশায় ম্যালেরিয়া নেই, যত রোগ বালাই সব কি এই ভন্দর পাড়ায় মশায় ? পাড়াকে পাড়া উজাড় করে দিলে একেবারে রোগে ! বিহারী বাড়িয্যের চারিটি ছেলে, বড় ছেলেটির বছর খানেক হইল। বিবাহ দিয়াছেন, বলিলেন। সে ছেলেটির স্বাস্থ্য এত খারাপ যে হাজারির মনে হইল এ গ্রামে আর দ-তিন বছর এভাবে যদি ছেলেটি কাটায়। তবে বড়িয্যে মশায়ের পত্রিবধার কপালের সিদর এবং হাতের নোয়ার মায়া কাটাইতেই হইবে। কিন্তু সে ছেলেটির বাড়ী ছাড়িয়া কোথাও যাইবার উপায় নাই, জমিজমা, চাষ-আবাদের সমস্ত কাজই তাহাকে দেখিতে হয়-বন্ধ বাঁড়িয্যে মশায় একরােপ অশক্ত হইয়া পড়িয়াছেন। বড় ছেলেটিই একমাত্র ভরসা। তাহার উপর ছেলেটি লেখাপড়া এমন কিছ জানে না যে বিদেশে বাহির হইয়া অর্থ