পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাদশ হিন্দী-হোটেল AS কিন্তু তাহা কি ঘটিবে? ভগবান কি এমন পাত্র টেপির ভাগ্যে জটাইয়া জটাইয়া দিবেন ! ছেলেটি খাওয়া শেষ করিয়া উঠিয়া বলিল-আপনার খাওয়া হয়েচে মামা ? -এইবার খেতে বসবো বাবা। আমাদের খাওয়া এইরকম। বেলা তিনটের এদিকে বড় একটা মেটে না, সেই জন্যই তো বলচি বাবা এ সব ছ্যাঁচড়া লাইন, তোমাদের জন্যে নয়। এসব। রান্নার কাজ বড় ঝঞ্জাটের কাজ। ছেলেটি একটি হতাশ সরে বলিল-তবে কোন লাইন ধরবো বলন মামা ? কত জায়গায় ঘরে বেড়িয়ে দেখলাম। আজ ছ'মাস ধরে ঘরচি। কোথাও কিছ জোটাতে পারিনি। আপনি বলচেন রাঁধানীর কাজ-কলকাতায় একটা হোটেলের বাইরে লেখা ছিল-দজন চাকর চাই। আমি গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করলাম, বল্লে-কি ? আমি বল্লাম চাকরের কাজ খালি আছে দেখে এসেচি। বল্লে-তুমি ভদ্রলোকের ছেলে, এ কাজ তোমার জন্যে নয়। কত করে বল্লাম, কিছতেই নিলে না। হাজারি অবাক হইয়া শনিতেছিল। বলিল-বলো কি ? —তারপর শােনন। কোথাও চাকরী জোটে না। কলকাতায় শেষকালে খেতে পাইনে এমন হোল। দ-একদিন তো না খেয়েই কাটলো। তারপর ভাবলাম, আমার এক মামা রাণাঘাটে হোটেলে কাজ করেন। সেইখানেই যাই। তাই আজ এলাম-উনি আমার আপনি মামা নয়। মামাদের জ্ঞাতি ভাই। তা এখানেও আপনি বলচেন এ লাইন আমার জন্যে নয়—তবে কোথায় যাবো। আর কি-ই বা করবো ? ছেলেটির হতাশার সাের এবং তাহার দঃখকন্টের কাহিনী হাজারির মনে বড় লাগিল। সে তখনও ভাবিতেছিল-আহা, ছেলে মানষ! আমার কড় ছেলে সন্তু বেচে থাকলে এতদিন এত বড়টা হোেত। টোপির সঙ্গে ভারি মানায়। সোনার চাঁদ যেন ছেলে! টেপি কি আর সে আদেশষ্ট করেচে। নাই বা হোল চাকরী ! ও গিয়ে টেপিকে বিয়ে করে আমার বড় ছেলে হয়ে আমার গাঁয়ের ভিটেতে গিয়ে বসাক-ওকে কোনো কািট করতে হবে না, আমি নিজে রোজগার করে ওদের খাওয়াবো। জমিজমাও তো আছে কিছল।