পাতা:আদায়ের ইতিহাস - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V ऊष्ट्र আজ কেউ ধমক দিল না, কিছুই বলিল না। প্রভা আশ্চর্য হইয়া সকলের মুখের দিকে চাহিতে লাগিল। তার মেয়ের গালে চড় মারার চেয়ে অনেক বেশী গুরুতর কিছু ঘটিয়াছে বুঝিতে পারা মাত্র কৌতুহলের বন্যায় অভিমান ভাসিয়া গেল। “কি হয়েছে মা ?” “হয়েছে আমার অদৃষ্ট আমার পোড়াকপাল!” কি হইয়াছে বুঝা গেল না বটে, কিন্তু ভয়ানক কিছু যে সত্যই হইয়াছে, সে বিষয়ে আর সন্দেহ রহিল না প্রভার। ধৈর্য ধরিয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সে মার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। জলভরা চোখের সে দৃষ্টি কামিনী বেশীক্ষণ সহ্য করিতে পারিলেন না, বলিলেন, “তিষ্ট চাকরী করবে না বলছে।” “ও, এই ! তিষ্ট ফাজলামি করছে।” প্রভার স্বামী রমেশের আজ চাকরী নাই তিন বছর, প্রভা ভাবিতেও পারে না মানুষ চাকরী পাইয়াও বলিতে পারে, সে চাকরী করিবে না । বাপের সঙ্গে এ ধরনের ফাজলামি করা ত্রিষ্টুপের স্বভাব নয়, তবু অথই জলে পড়িলে মানুষ যেমন হাতের কাছে যা পায় তাই আঁকড়াইয়া ধরে, অবিনাশ ও কামিনীও তেমনি প্রভার কথা শুনিয়া উৎসুকদৃষ্টিতে ছেলের মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন আশ্চর্য কি, সকলকে একটু চমক দেওয়ার জন্য ত্রিষ্ট্রপ হয় তো ফাজলামিই করিতেছে। ত্রিষ্টুপ কথা বলিল না, সে তখন অবাক হইয়া খোলা দরজা দিয়া ওদিকের রোয়াকে একটা তুচ্ছ ঘটনা লক্ষ্য করিতেছিল। রোয়াকে একটি আধাপোড়া বিড়ি পড়িয়াছিল, কোথা হইতে আসিয়া ঘরে ঢুকিতে গিয়া রমেশ হঠাৎ থমকিয়া দাড়াইয়া বিড়িটা কুড়াইয়া নিয়াছে। বিড়ি নিয়া রমেশ ঘরের মধ্যে চলিয়া গেল, সেখান হইতে ডাক আসিল রাণুর। ঘরে গিয়া সঙ্গে সঙ্গে রাণু ফিরিয়া আসিল ।