পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

, কি উন্মাদ নেশায় মাতিলে জল-স্থল, আকাশ-বাতাস—সব রাঙ্গা দেখায়, সমস্ত চৈতন্য কি কব্যি চেতনা হারাইয়া, একখণ্ড প্রাণহীন চুম্বক-শলাকার মত শুধু সেই একদিকে ঝুকিয়া পখিবার জন্যই অনুক্ষণ উন্মুক্ত হইয়া থাকে। পরদিন সকালে সত্য জাগিয়া উঠিয়া দেখিল, নােদ উঠিয়াছে। একটা ব্যথার তরঙ্গ তাহাব কণ্ঠ পর্যন্ত আলােড়িত করিয়া গড়াইয়া গেল ; সে নিশ্চিত বুঝিল, আজিকার দিনটা একেবারে ব্যর্থ হইয়া গিয়াছে। চাকরটা সুমুখ দিয়া যাইতেছিল, তাহাকে ভয়ানক ধমক দিয়া কহিল, হারামজাদা, এত বেলা হয়েছে, তুলে দিতে পাবিস নি ? তােব এক টাকা জরিমানা। সে বেচাব হতবুদ্ধি হইয়া চাহিয়া রহিল। সত্য দ্বিতীয় বস্ত্র না লইয়াই ৰু-মুখে বাসা হইতে বহিব হইয়া গেল। পথে আসবা গাড়ি ভাড়া করিল এ গাড়ােয়ানকে পাথুরেঘাটার ভিতর দিয়া হাঁকাইতে হুকুম কৰিবা, বাস্তার দুইদিকেই প্রাণপণে চোখ পাতিয়া রাখিল। কিন্তু গঙ্গাধ আসিযা, ঘাটের দিকে চাহিতেই তাহাব সমস্ত ক্ষোভ যেন জুড়াইয়া গেল, বরঞ্চ মনে হল, যেন অকস্মাৎ পথের উপরে নিক্ষিপ্ত একটা অমূল্য বহু কুড়াইয়া পাইল। গাড়ি হইতে নামিতেই তিনি মৃদু হাসিয। নিতান্ত পবিচিতের মত বলিনে, এত দেরি যে? আমি আধ ঘণ্টা দাড়িয়ে আছি—শিগগির নেয়ে নিন, আজও আমার ঝি আসেনি। | এক মিনিট সবুর করুন, বলিয়া সত্য দ্রুতপদে জলে গিয়া নামিল সাঁতার কাটা তাহাব কোথায় গেল! সে কোনমতে গোটা দুই-তিন ডুব দিয়া ফিবিয়া আসিয়া কহিল, আমার গাড়ি গেল কোথায় ? রমণী কহিলেন, আমি তাকে ভাড়া দিয়ে বিদেয় কবেচি। আপনি ভাড়া দিলেন!