পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

চোখ মুছে ধরা-গলায় বললেন, আর একটু দাড়াও। তােমার এ কি ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ? এর নড়চর কি নেই? অবিনাশ ঘাড় নেড়ে বললেন, না। সে হবার জো নেই। দেখাে, আমি তােমার স্ত্রী, তােমার সুখ-দুঃখের ভাগী – অবিনাশ বাধা দিলেন, বললেন, তা যদি সত্যি হয় ত আমার সুখের ভাগ এতদিন পেয়েছ, এবার আমার দুঃখের ভাগ নাও। | আলোেক বললেন, রাজী আছি কিন্তু সমস্ত মান-ইজ্জত বজায় রেখে এতগুলো টাকায় চলে না, এই সামান্য ক’টা পেনশনের টাকায় চালাবে। কি করে ? | অবিনাশ বললেন, মান-ইজ্জত বলতে যদি বড়মানুষি বুঝে থাকে। ত চলবে না আমি স্বীকার করি। নইলে সঞ্জীববাবুরও চলে। কিন্তু তােমার মেয়ে ? উনিশ-কুড়ি বছরের হলাে, তার বিয়ে দেবে কি করে ? মেয়ের সমস্যার সমাধান করতে শাশ্বতী বললে, মা, আমার বিয়ের জন্যে তুমি ভেবাে না। যদি নিতান্তই ভাবতে চাও ত বরঞ্চ ভেবে সঞ্জীববাবু কি করে তার দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। উত্তর শুনে মায়ের আর একবার ধৈর্যচ্যুতি ঘটলাে। সজল চক্ষু দৃপ্ত হলাে, ধরা-গলা মুহূর্তে তীক্ষ হয়ে কণ্ঠস্বর গেল উঁচু পর্দায় চড়ে। বললেন, শাশ্বতী, পােড়ারমুখী, আমার সুমুখ থেকে এখনাে তুই দূর হয়ে গেলি নে কেন ? যা যা বলছি। যাচ্চি মা। চলাে না বাবা। পাশের ঘরে হিমাংশু কবিতা রচনায় রত ছিল। আই. এ. পরীক্ষার তৃতীয় উদ্যমের এখনো কিঞ্চিৎ বিলম্ব আছে। তার কবিতা বাতায়ন' পত্রিকায় ছাপা হয়, আর কোন কাগজওয়ালা নেয় না। বাতায়ন’-সম্পাদক উৎসাহ দিয়ে চিঠি লেখেন, “হিমাংশুবাবু, ৩৮