পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

বিলাস’ মাত্র, তাহা হইলে আর কথা চলে না। কিন্তু আমার কথা চলুক আর না-চলুক, তাহাতে কিছুই আসিয়া যায় না; কিন্তু যাহাতে যথার্থই আসিয়া যায় অন্ততঃ আসিয়া গিয়াছে ; তাহা এই যে, সেই সমস্ত প্রাচীন দিনের ঋষিদিগে অপরিমেয় অতুল্য বুদ্ধিরাশির ভরানৌক। এইখানেই ঘা খাইয়া চিরদিনের মত ডুবিয়াছে। যে-কেহ হিন্দুশাস্ত্র আলােচনা করিয়াছেন, তিনিই বােধ করি অত্যন্ত ব্যথার সহিত অনুভব করিয়াছেন, কি করিয়া ঋষিদিগের স্বাধীন চিন্তার শৃঙ্খল এই বেদেরই তীক্ষ্ণ খড়ে ছিন্নভিন্ন হইয়া পথে-বিপথে যেখানে-সেখানে যেমন-তেমন করিয়া আজ পড়িয়া আছ। চোখ মেলিলেই দেখা যায়, যখনই সেই সমস্ত বিপুল চিন্তার ধারা সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধিব অনুসরণ কবিয়া ছুটিতে গিয়াছে, তখনই বেদ তাহার দুই হাত বাড়াইয়া তাহাদের চুলের মুঠি ধরিয়া টানিয়া আর একদিকে ফিরাইয়া দিয়াছে। তাহাদিগকে ফিরাইয়াছে সত্য, কিন্তু পাশ্চাত্য পণ্ডিত বা তাহাদেরই পদাঙ্কানুসাবী দেশীয় বিদ্বাৰ্গণকে ঠিক তেমন করিয়া নিবৃত্ত কৰা শক্ত। কিন্তু সে যাই হউক, কেন যে তঁাহার। এই প্রথমটিকে হিন্দুর ভ্রম এবং অধঃপতনের হেতু বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন, অধ্যাপক মহাশয় তাহার যখন কিছুমাত্র হেতুর উল্লেখ না করিয়। শুধু উক্তিটা তুলিয়া দিয়াই ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছেন, তখন ইহা লইয়া আলােচনা আপাততঃ প্রয়োজন অনুভব করি না।। অতঃপর অধ্যাপক মহাশয় বলেন বৈদশিক পণ্ডিতেরা পরমপুরুষের এই চাতুৰ্বর্ণ অঙ্গবিলাসটি মানিতে চাহেন না এবং বলেন ঋবেদের সময়ে চাতুব্বর্ণ ছিল না। কারণ, এই বেদের আদ্য কতিপয় মণ্ডলে ভারতবাসিগণের কেবল দ্বিাধ ভেদের উল্লেখ আছে। আর যদিই বা কোনস্থানে চাতুর্বর্ণের উল্লেখ থাকে, তবে তাহা প্রক্ষিপ্ত । এই কথায় অধ্যাপক মহাশয় ইহাদিগকে অন্ধ বলিয়া ক্রোধে ইহাদের চোখে আঙুল দিয়া দিবেন বলিয়া শাসাইয়াছেন। কারণ, ৬০