পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

আর্যগণের মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, চতুবিধ ভেদের স্পষ্ট উল্লেখ থাকিতেও তাহা তাহাদের দৃষ্টিগােচর হয় নাই। তার পর “আর্যং বর্ণ’ শব্দটার অর্থ লইয়া উভয় পক্ষের যৎকিঞ্চিৎ বচসা আছে। কিন্তু আমরা ত বেদ জানি না, সুতরাং এই ‘আর্যং বণং শেষে কি মানে হইল, ঠিক বুঝিতে পারিলাম না। তবে মােটামুটি বুঝা গেল যে, এই ‘ব্রাহ্মণ’ শব্দটা লইয়া একটু গােল আছে। কারণ, ব্রহ্ম’ শব্দটির ‘মন্ত্র’ অর্থও নাকি হয়। অধ্যাপক মহাশয় বলিতেছেন, ম্যাক্সমুলারের এত সাহস হয় নাই যে বলেন, ‘ছিলই না, কিন্তু প্রতিপন্ন করিতে চাহেন যে, হিন্দ, চাতুববণ্য বৈদিক যুগে ‘স্পষ্টতঃ বিদ্যমান ছিল না ; অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রের যে বিভিন্ন বৃত্তির কথা শুনা যায়—তাহার তত বাঁধাবাঁধি বর্ণচতুষ্টয়ের মধ্যে তৎকালে আবিভূত হয় নাই—অর্থাৎ যােগ্যতাঅনুসারে যে-কোন লােক যে-কোন বৃত্তি অবলম্বন করিতে পারিত। আমার ত মনে হয়, পণ্ডিত ম্যাক্সমূলার জোর করিয়া ছিলই না’ বলিয়া নিজের যে পরিচয় দিয়াছেন, তাহা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাতেই শুধু অজিত হয়। কিন্তু প্রত্যুত্তরে ভববিভূতিবাবু বলিতেছেন, “সায়ণ চতুর্দশ শতাব্দীর লােক বলিয়া না হয় তাহার ব্যাখ্যা উড়াইয়া দিতে প্রবৃত্ত হইতে পার, কিন্তু সেই অপৌরুষেয় বেদেরই অন্তর্গত ঐতরেয় ব্রহ্মণ যখন ব্রাহ্মণস্পতি’ অর্থে ব্রাহ্মণপুরােহিত [ ঐ, ব্রা, ৮৫।২৫, ২৬ ] করিলেন, তখন তাহা কি বলিয়া উড়াইয়া দিবে? ব্রহ্মণ্যশক্তি যে সমাজ ও রাজশক্তির নিয়ন্ত্রী ছিল, তাহা আমরা ঋগ্বেদেই দেখিতে পাই!” পাওয়াই ত উচিত। কিন্তু কে উড়াইয়া দিতেছে এবং দিবার প্রয়ােজনই বা কি হইয়াছে, তাহা ত বুঝা গেল না। ব্রাহ্মণ পূরােহিত-বেশ ত! পুরােহিতের কাজ যিনি করিতেন, তাহাকেই ব্রাহ্মণ বলা হইত। যজন-জন করিলে ব্রাহ্মণ বলিত; যুদ্ধ, রাজ্য