বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আধুনিক সাহিত্য-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯
বিহারীলাল
২৯

সুখ বর্ণনা করে না; নগরের বিস্ময়জনক বৈচিত্র্য তাহার চিত্ত আকর্ষণ করে, তখন সে গাহিয়া ওঠে​—

‘কী কল বানিয়েছে সাহেব কোম্পানি!
কলেতে ধোঁওয়া ওঠে আপনি, সজনি।’

 কলের বাঁশি যাহারা শুনিতেছে মাঠের ‘বাঁশের বাঁশরি’ শুনিয়া তাহারা ব্যাকুল হয় এবং যাহারা বাঁশের বাঁশরি বাজাইয়া থাকে কলের বাঁশি শুনিলে তাহাদের হৃদয় বিচলিত হইয়া উঠে। এইজন্য শহরের কবিও সুখের কথা বলে না, মাঠের কবিও আকাঙ্ক্ষার চাঞ্চল্য গানে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করে।

 সুখ চিরকালই দূরবর্তী, এইজন্য কবি যখন গাহিলেন ‘সর্বদাই হু হু করে মন’ তখন বালকের অন্তরেও তাহার প্রতিধ্বনি জাগিয়া উঠিল। কবি যখন বলিলেন—

‘কভু ভাবি ত্যেজে এই দেশ,
যাই কোনাে এ হেন প্রদেশ,
যথায় নগর গ্রাম
নহে মানুষের ধাম,
পড়ে আছে ভগ্ন-অবশেষ।
গর্ব-ভরা অট্টালিকা যায়,
এবে সব গড়াগড়ি যায়—
বৃক্ষলতা অগণন
ঘের করে আছে বন,
উপরে বিষাদবায়ু বায়
প্রবেশিতে যাহার ভিতরে
ক্ষীণ প্রাণী নরে ত্রাসে মরে,
যথায় শ্বাপদদল