পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১১০
আনন্দ মঠ।

একটা রূপী বাঁদর ছিল, সেটা সম্প্রতি মরে গেছে; কোটর খালি পড়ে আছে। কোমরে ছেকল দেবো, তুমি সেই কোটরে থাক্‌বে? আমাদের বাগানে বেশ মর্ত্তমান কলা হয়।

 সাহেব। টুমি বড় spirited woman আছে, টোমাড় courage a হামি খুসী আছে। টুমি আমার গোড়ে চল। টোমার স্বামী যুড্ডে মরিয়া যাইবে। টখন টোমাড় কি হইবে?

 শান্তি। তবে তোমার আমার একটা কথা থাক। যুদ্ধ ত দুদিন চারিদিনে হবেই। যদি তুমি জেত তবে আমি তোমার উপপত্নী হইয়া থাকিব স্বীকার করিতেছি, যদি বাঁচিয়া থাকি। আর আমরা যদি জিতি, তবে তুমি আসিয়া, আমাদের কোটরে বাঁদর সেজে কলা খাবে ত?

 সাহেব। কলা খাইটে উট্টম জিনিষ। এখন আছে?

 শান্তি। নে তোর বন্দুক নে। এমন বুনো জেতের সঙ্গেও কেউ কথা কয়!

 শান্তি বন্দুক ফেলিয়া দিয়া হাসিতে হসিতে চলিয়া গেল।


তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

 শান্তি সাহেবকে ত্যাগ করিয়া হরিণীর ন্যায় ক্ষিপ্রচরণে বনমধ্যে কোথায় প্রবিষ্ট হইল। সাহেব কিছু পরে শুনিতে পাইলেন স্ত্রী কণ্ঠে গীত হইতেছে।

এ যৌবন জলতরঙ্গ রোধিবে কে?
হরে মুরারে! হরে মুরারে!

 আবার কোথায় শারঙ্গের মধুর নিক্বণে বাজিল তাই;—

এ যৌবন জলতরঙ্গ রোধিবে কে?