পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ।
১৪৯

 মাথার উপর গাছের ডালে বসিয়া কে বলিল “আমি জানি কন্যা কোথায় আছে।” মহেন্দ্র উন্মুখ হইয়া বলিলেন “তুমি কে?”

 সত্যানন্দ একটু রুষ্টভাবে উন্মুখ হইয়া বলিলেন, “নবীনানন্দ! আমি তোমাকে বিদায় দিয়াছিলাম! তুমি এখনও এখানে কেন?”

 শান্তি গাছের উপর হইতে বলিল, “প্রভু, স্বর্গে মর্ত্ত্যে আপনার অধিকার আছে, গাছের ডালে কি?”

 এই বলিয়া ঝুপ করিয়া শান্তি নামিয়া পড়িল। সত্যানন্দ মহেন্দ্রকে বলিলেন, “ইনি নবীনানন্দ গোস্বামী—অতি পবিত্রচেতা, আমার প্রিয়শিষ্য। ইনি তোমার কন্যার সন্ধান বলিয়া দিবেন।” এই বলিয়া সত্যানন্দ শান্তিকে কিছু ইঙ্গিত করিলেন। শান্তি তাহা বুঝিয়া প্রণাম করিয়া বিদায় হয়, তখন মহেন্দ্র বলিলেন “কোথায় তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ হইবে?”

 শান্তি বলিল, “আমার আশ্রমে আসুন।” এই বলিয়া শান্তি আগে আগে চলিল।

 তখন মহেন্দ্র ব্রহ্মচারীর পাদবন্দনা করিয়া বিদায় হইলেন এবং শান্তির সঙ্গে সঙ্গে তাহার আশ্রমে উপস্থিত হইলেন। তখন অনেক রাত্রি হইয়াছে। তথ্যপি শান্তি বিশ্রাম না করিয়া নগরাভিমুখে যাত্রা করিল।

 সকলে চলিয়া গেলে, ব্রহ্মচারী, একা ভূমে প্রণত হইয়া, মাটিতে মস্তক স্থাপন করিয়া মনে মনে জগদীশ্বরের ধ্যান করিতে লাগিলেন। রাত্রি প্রভাত হইয়া আসিল। এমন সময় কে আসিয়া তাঁহার মস্তক স্পর্শ করিয়া বলিল, “আমি আসিয়াছি।”

 ব্রহ্মচারী উঠিয়া চমকিত হইয়া অতি ব্যগ্রভাবে বলিলেন