পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১৫৪
আনন্দ মঠ।

চারী দ্রুতবেগে ধাবমান হইয়া কল্যাণীকে ধরিয়া গাঢ় আলিঙ্গন করিল। তখন কল্যাণী খিল খিল করিয়া হাসিল, বলিল, “ও পোড়া কপাল! আগে বলতে হয় ভাই, যে আমারও ঐ দশা।” শান্তি বলিল “ভাই মহেন্দ্রের খোঁজে চলিয়াছ।”

 কল্যাণী বলিল। “তুমি কে, তুমি যে সব জান দেখিতেছি।”

 শান্তি বলিল, “আমি ব্রহ্মচারী—সন্তানসেনার অধিনায়ক—ঘোরতর বীরপুরুষ! আমি সব জানি। আজ পথে সিপাহী আর সন্তানের যে দৌরাত্ম্য তুমি আজ পদচিহ্নে যাইতে পরিবে না।”

 কল্যাণী কাঁদিতে লাগিল।

 শান্তি চোখ ঘুরাইয়া বলিল “ভয় কি? আমরা নয়নবাণে সহস্র শক্র বধ করি। চল পদচিহ্নে যাই।”

 কল্যাণী এরূপ বুদ্ধিমতী স্ত্রীলোকের সহায়তা পাইয়া যেন হাত বাড়াইয়া স্বর্গ পাইল। বলিল, “তুমি যেখানে লইয়া যাইবে সেইখানে যাইব।”

 শান্তি তখন তাহাকে সঙ্গে করিয়া বন্যপথে লইয়া চলিল।


চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ।

 যখন শান্তি আপন আশ্রম ত্যাগ করিয়া গভীর রাত্রে নগরাভিমুখে যাত্রা করে, তখন জীবানন্দ আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন। শান্তি জীবানন্দকে বলিল “আমি নগরে চলিলাম। মহেন্দ্রের স্ত্রীকে লইয়া আসিব। তুমি মহেন্দ্রকে বলিয়া রাখ যে উহার স্ত্রী আছে।”

 জীবানন্দ ভবানন্দের কাছে কল্যাণীর জীবন রক্ষা বৃত্তান্ত সকল অবগত হইয়াছিল—এবং তাহার বর্ত্তমান বাসস্থানও সর্ব্বস্থান-