বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৩৩

 মহে। আমার স্ত্রীকন্যার সংবাদ না পাইলে আমি কিছু বলিতে পারি না।

 ভবা। চল, তবে তোমার স্ত্রীকন্যাকে দেখিবে চল।

 এই বলিয়া দুই জনে চলিল; ভবানন্দ আবার “বন্দে মাতরং” গায়িতে লাগিল। মহেন্দ্রের গলা ভাল ছিল, সঙ্গীতে একটু বিদ্যা ও অনুরাগ ছিল—সুতরাং সঙ্গে গায়িল—দেখিল যে গায়িতে গায়িতে চক্ষে জল আইসে। তখন মহেন্দ্র বলিল,

 “যদি স্ত্রীকন্যা ত্যাগ না করিতে হয় তবে এ ব্রত আমাকে গ্রহণ করাও”।

 ভবা। এ ব্রত যে গ্রহণ করে, সে স্ত্রীকন্যা পরিত্যাগ করে। তুমি যদি এ ব্রত গ্রহণ কর, তবে স্ত্রী কন্যার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হইবে না। তাহাদিগের রক্ষা হেতু উপযুক্ত বন্দোবস্ত করা যাইবে, কিন্তু ব্রতের সফলতা পর্য্যন্ত তাহাদিগের মুখদর্শন নিষেধ।

 মহেন্দ্র। আমি এ ব্রত গ্রহণ করিব না।


একাদশ পরিচ্ছেদ।

 রাত্রি প্রভাত হইয়াছে। সেই জনহীন কানন,—এতক্ষণ অন্ধকার, শব্দহীন ছিল—এখন আলোকময়—পক্ষিকুজনশব্দিত হইয়া আনন্দময় হইল। সেই আনন্দময় প্রভাতে আনন্দময় কাননে, “আনন্দমঠে”, সত্যানন্দ ঠাকুর হরিণচর্ম্মে বসিয়া সন্ধ্যাহ্নিক করিতেছেন। কাছে বসিয়া জীবানন্দ। এমন সময়ে ভবানন্দ মহেন্দ্র সিংহকে সঙ্গে লইয়া আসিয়া উপস্থিত হইল। ব্রহ্মচারী বিনাবাক্যব্যয়ে সন্ধ্যাহ্নিক করিতে লাগিলেন, কেহ কোন কথা কহিতে সাহস করিল না। পরে সন্ধ্যাহ্নিক সমাপন হইলে, ভবানন্দ,