পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অদল বদল

কালিদাসের মেঘদূত ব্যাপারটা কি বোধ হয় আপনারা জানেন। যদি ভুলে গিয়ে থাকেন তাই একটু মনে করিয়ে দিচ্ছি। কুবেরের অনুচর এক যক্ষ কাজে ফাঁকি দিত, সেজন্য প্রভুর শাপে তাকে এক বৎসর নির্বাসনে থাকতে হয়। সে রামগিরিতে আশ্রম তৈরি করে বাস করতে লাগল। আষাঢ়ের প্রথম দিনে যক্ষ দেখল, পাহাড়ের মাথায় মেঘের উদয় হয়েছে, দেখাচ্ছে যেন একটি হস্তী বপ্রক্রীড়া করছে। অঞ্জলিতে সদ্য ফোটা কুড়চি ফল নিয়ে সে মেঘকে অর্ঘ্য দিল এবং মন্দাক্রান্তা ছন্দে একটি সুদীর্ঘ অভিভাষণ পাঠ করল। তার সার মর্ম এই।—ভাই মেঘ, তোমাকে একবার অলকাপুরী যেতে হচ্ছে। ধীরে সুস্থে যেয়ো, পথে কিঞ্চিৎ ফুর্তি করতে গিয়ে যদি একটু দেরি হয়ে যায় তাতে ক্ষতি হবে না। অলকায় তোমার বউদিদি আমার বিরহিণী প্রিয়া আছেন, তাঁকে আমার বার্তা জানিয়ে আশ্বস্ত ক’রো। ব’লো, আমার শরীর ভালই আছে, কিন্তু চিত্ত তাঁর জন্য ছটফট করছে। নারায়ণ অনন্তশয্যা থেকে উঠলেই অর্থাৎ কার্তিক মাস নাগাদ শাপের অবসান হবে, তার পরেই আমরা পূনর্মিলিত হব।

 কালিদাস তাঁর যক্ষের নাম প্রকাশ করেন নি, শাপের এক বৎসর শেষ হলে সে নিরাপদে ফিরতে পেরেছিল কিনা তাও লেখেন নি। মহাভারতে উদ্যোগপর্বে এক বনবাসী যক্ষের কথা আছে, তার নাম স্থূণাকর্ণ। সেই যক্ষ আর মেঘদূতের যক্ষ একই লোক তাতে সন্দেহ নেই। কালিদাস তাঁর কাব্যের উপসংহার লেখেন নি, মহাভারতেও