পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদল বদল
১০১

 কোনও সাড়া পাওয়া গেল না। কুবের বললেন, বাড়িতে কেউ নেই মনে হচ্ছে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া যাক।

 যক্ষিণী বলল, অমন কাজ করবেন না মহারাজ। আমার স্বামী এই বাড়িতেই আছেন, আমি মাছ ভাজার গন্ধ পাচ্ছি, নিশ্চয় উনি রান্নায় ব্যস্ত আছেন, আহা, কেউ তো সাহায্য করবার লোক নেই। আমিই ওকে ডাকছি। ওগো, শুনতে পাচ্ছ? আমি এসেছি, মহারাজও এসেছেন। রান্না ফেলে রেখে চট করে তুমি বেরিয়ে এসো।

 একটি জানালা ঈষৎ ফাঁক হল। ভিতর থেকে নারীকণ্ঠে উত্তর এলো, অ্যাঁ, প্রিয়ে তুমি এসেছ, প্রভু এসেছেন? কি সর্বনাশ, তাঁর সামনে আমি বেরব কি করে?

 আশ্চর্য হয়ে কুবের বললেন, কে গো তুমি? এখনই বেরিয়ে এসো, নয় তো বাড়িতে আগুন লাগাব।

 তখন দরজা খুলে একটি অবগুণ্ঠিতা নারীমূর্তি বেরিয়ে এল। কুবের ধমক দিয়ে বললেন, আর ন্যাকামি করতে হবে না, তোমার ঘোমটা খোল।

 মাথা নীচু করে ঘোমটাবতী উত্তর দিল, প্রভু, এ মুখ দেখাব কি করে?

 কুবের বললেন, পুড়িয়েছ নাকি? ভেবো না, শিব যাতে চড়েন সেই বৃষভের সদ্যোজাত গোময় লেপন করলেই সেরে যাবে।

 যক্ষিণী হঠাৎ এগিয়ে গিয়ে এক টানে ঘোমটা খুলে ফেলল। মাথা চাপড়ে নারীমূর্তি বলল, হায় হায়, এর চাইতে আমার মরণই ভাল ছিল।

 কুবের প্রশ্ন করলেন, কে তুমি? সেই স্থূণাকর্ণ যক্ষটা কোথায় গেল? তুমি তার রক্ষিতা নাকি?

 —মহারাজ, আমিই আপনার হতভাগ্য কিংকর স্থূণাকর্ণ, দৈব-