পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দীবাঈ

রাজহংসীও রাজী হলেন, শেঠজীর বেশী বয়সের জন্যে কিছুমাত্র আপত্তি প্রকাশ করলেন না। আর্যসমাজী পদ্ধতিতে বিবাহ হয়ে গেল। তার পর নূতন বাড়িও কেনা হল, রাজহংসী সেখানে বাস করতে লাগলেন।

 কিছুদিন পরে ত্রিক্রমদাস তাঁর কলকাতার কারবার পরিদর্শন করতে গেলেন। ওখানকার ম্যানেজার পরিতোষ হোড়-চৌধুরী খুব কাজের লোক, আলিপুরে সাহেবী স্টাইলে থাকেন। তিনি তাঁর মনিবকে ডিনারের নিমন্ত্রণ করে বাড়িতে নিয়ে গেলেন। সেখানে পরিতোষের স্ত্রী আর ভগ্নীর সঙ্গে ত্রিক্রমদাসের পরিচয় হল। মিস বলাকা হোড়-চৌধুরীকে দেখে শেঠজী অবাক হয়ে গেলেন। রাজহংসীর মতন রূপসী নয় বটে, কিন্তু শাড়ি পরবার ভঙ্গীটি কি চমৎকার, আর বাত-চিত আদব কায়দাও কি সুন্দর! মেমসাহেবদের মতন ইংরেজী উচ্চারণ করে, আর হিন্দী বলতে ভুল করে বটে কিন্তু সেই ভুল কি মিষ্টি! শেঠজী একেবারে কাবু হয়ে পড়লেন। পরিতোষ হোড়-চৌধুরী তাঁকে জানালেন, বলাকা এম. এ. পাস, নাচগানে কলকাতায় ওর জুড়ী নেই, সিনেমাওয়ালারা ওকে পাবার জন্যে সাধাসাধি করছে, কিন্তু পরিতোষের তাতে মত নেই। বিক্রমদাস নিজেকে সামলাতে পারলেন না, বলে ফেললেন, মিস বলাকা, মৈ তুমকো শাদি করুংগা।

 বলাকা সহাস্যে উত্তর দিলেন, তা বেশ তো, কিন্তু দিল্লির গরম তো আমার সইবে না, আর আপনাদের দাল-রোটি ভাজী দহিবড়া আমার হজম হবে না।

 শেঠজী বললেন, আরে দিল্লি যেতে তোমাকে কে বলছে? আমি এই আলিপুরে একটা মোকাম কিনব, তুমি সেখানে তোমার দাদার কাছাকাছি বাস করবে। আমি বছরে আট-ন মাস এখানেই কাটাব,