পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

 পুরুষের কালো রঙে কেউ দোষ ধরে না, কিন্তু সবাই ফরসা মেয়ে খোঁজে, যে জোঁক-কালো সেও অপ্সরী বিদ্যাধরী বউ চায়। আপনি সংকোচ করবেন না, আমার কালো রঙে আপত্তি থাকলে সম্বন্ধ বাতিল করে দেবেন। আর আপত্তি না থাকলে দয়া করে পাঁচ দিনের মধ্যে এক লাইন লিখে জানাবেন। ইতি। সুনন্দা।


 চিঠি পেয়েই সুকান্ত উত্তর লিখল।—আপনার রঙ আমার চাইতে এক পোঁচ বেশী ময়লা হলেও আমার আপত্তি নেই। তবে সত্য কথা বলব। প্রথমটা মন খুঁতখত করেছিল, কারণ সুন্দরী বউ একটা সম্পদ, স্বামীর গৌরব আর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করে। কিন্তু পরেই মনে হল, এ রকম ভাবা নিতান্ত মূর্খতা। ফোটো দেখে বুঝেছি আপনার সৌষ্ঠবের অভাব নেই, তাই যথেষ্ট। রঙ ময়লা হলেই মানুষ কুৎসিত হয় না।

 আমার একটা কদভ্যাস আছে, জানানো উচিত মনে করি। রোজ পনরো-কুড়িটা সিগারেট খাই। আমার এক বউদিদি বলেন, সিগারেটখোরদের নিশ্বাসে একটা বিশ্রী মুখপোড়া গন্ধ হয়, তাদের বউরা তা পছন্দ করে না, কিন্তু চক্ষুলজ্জায় কিছু বলতে পারে না। দু-চারটে বাঙালীর মেয়ে যারা মেমদের দেখাদেখি সিগারেট ধরেছে তাদের অবশ্য আপত্তি হতে পারে না, কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই সে দলের নন। আপনার আপত্তি থাকলে এক লাইন লিখে জানাবেন, আমি সম্বন্ধ বাতিল করে দেব। ইতি। সুকান্ত।


 চার দিন পরে সুনন্দার উত্তর এল।—মুখপোড়া গন্ধে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু শুনেছি সিগারেট খেলে নাকি ক্যানসার হয়। আপনি ওটা ছেড়ে দিয়ে হুঁকো ধরুন না কেন? তার গন্ধেও আমার