পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দীবাঈ

 শেঠজী বললেন, আচ্ছা, তার ব্যবস্থা হবে। আজ আমি থাকতে পারব না, জরুরী কাজে এখনই কলকাতা রওনা হব।

 কলকাতায় পৌঁছে ত্রিক্রমদাস সোজা আলিপুরে বলাকার কাছে গেলেন। ড্রইংরুমে একজন সুদর্শন ভদ্রলোক পিয়ানো বাজাচ্ছিলেন আর বলাকা তালে তালে নাচছিলেন। ত্রিক্রমকে দেখে বলাকা বললেন, একি শেঠজী, হঠাৎ এলে যে! এঁকে বোধ হয় চেন না, ইনি হচ্ছেন লোটনকুমার ভড়, দূর সম্পর্কে আমার মাসতুতো ভাই, নাচের ওস্তাদ। এঁর কাছে আমি কবুতর-নৃত্য শিখছি। দেখবে একটু?

 ত্রিক্রম বললেন, এখন আমার ফুরসত নেই। বলাকা, তোমার সঙ্গে আমার বহুত জরুরী কথা আছে।

 লোটনকুমার উঠে গেলে ত্রিক্রমদাস কম্পিত বক্ষে তাঁর তিন বিবাহের কথা প্রকাশ করলেন। বলাকা গালে আঙুল ঠেকিয়ে বললেন, ওমা তাই নাকি! ওঃ শেঠজী, তুমি একটি আসল পানকৌড়ি, নটবর নাগর। তা তুমি অমন মুষড়ে গেছ কেন, তিনটে বউ আছে তো হয়েছে কি? ঠিক আছে, তুমি ভেবো না, আমি হিংসুটে মেয়ে নই। কিন্তু তুমি যেন সবাইকে বলে বেড়িয়ো না।......হ্যাঁ, ভাল কথা, দেখ শেঠজী, একটা নতুন মোটরকার না হলে চলছে না, পুরনো অস্টিনটা হরদম বিগড়ে যাচ্ছে। তুমি হাজার কুড়ি টাকার একটা চেক আমাকে দিও, তার কমে ভাল গাড়ি মিলবে না।

 ত্রিক্রমদাস বললেন, আচ্ছা, তার ব্যবস্থা হবে। আমি এখন উঠি, আজই দিল্লি যেতে হবে।


ত্রিক্রমদাস দিল্লিতে এসেই খজনচাঁদের কাছে গিয়ে সকল বৃত্তান্ত জানালেন। তার পর তাঁকে সঙ্গে করে নিজের বাড়িতে এনে ড্রইংরুমে অপেক্ষা করতে বললেন।