পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

নন্দী বিধানসভায় দাঁড়াচ্ছেন। লোকটি যেমন মাতাল তেমনি লম্পট, দুটো খোরপোষের মামলা এখনও ঝুলছে। কিন্তু ইনি আমার এক জন বড় মক্কেল। যদি শোনেন যে আমি তোমাদের সাহায্য করছি তবে আমাকে আর কেস দেবেন না। তার পর মিস্টার রাধাকান্ত বাসু, লোকসভার ক্যাণ্ডিডেট। বিখ্যাত চোর আর ঘুষখোর। কিন্তু তাঁর ছেলের সঙ্গে আমার ছোট মেয়ের বিবাহ স্থির হয়েছে। এখন যদি তোমার কথা রাখি তবে অমন ভাল সম্বন্ধটি ভেস্তে যাবে।

 বিনায়ক বলল, জেনে শুনে চোর ঘুষখোরের ছেলের সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দেবেন?

 —তাতে ক্ষতিটা কি, মেয়ে তো সুখে থাকবে। তা ছাড়া আমার বেয়াই মিস্টার বাসু চোর বলে আমারও জামাইও যে চোর হবে এমন কথা সায়েন্সে বলে না। আবার দেখ, আমার বড় ছেলেটা কোনও গতিকে এম. এ. পাস করে বেকার বসে আছে আর কমরেডদের পাল্লায় পড়ে বিগড়ে যাচ্ছে। তার একটা ভাল পোস্টের জন্যে শ্রীগিরিধারী লাল পাচাড়ী চেষ্টা করছেন। আমার বিশিষ্ট বন্ধু, কিন্তু চুটিয়ে কালো বাজার চালান আর পাকিস্তানে চাল আটা তেল কাপড় পাচার করেন। তুমি কি বলতে চাও তাঁকে চটিয়ে দিয়ে আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করব?

 বিনায়ক বলল, তবে আপনাদের কাছে কোনও আশা নেই?

 —দেখ বিনায়ক, তোমরা যে মহৎ ব্রত নিয়েছ তাতে আমার অন্তত খুব সিমপ্যাথি আছে। তবে বুঝতেই পারছ, আমি আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছি। চাও তো কিছু টাকা দিতে পারি, কিন্তু সেটা যেন প্রকাশ না হয়।

 বিনায়ক বলল, থাক, টাকা এখন চাই না। আচ্ছা, আমরা চললুম, নমস্কার।