পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যযাতির জরা
১৬১

আমরা মহা সমস্যায় পড়লাম। আমরা দুজনেই বৃদ্ধ, সে কারণে মনোহরার মনোমত পাত্র নই। এমন সময় ভাগ্যক্রমে আপনার ঘোষণা শুনলাম, তাই সত্বর এখানে এসেছি। মহারাজ, সকল বিষয়েই আমি এই কন্যার যোগ্য পাত্র, আমার সঙ্গেই আপনার বয়স বিনিময় করুন, তা হলে আমাদের বিবাহে কোনও বাধা থাকবে না।

 হরীতক উত্তেজিত হয়ে বললেন, মহারাজ, আমার দাদার প্রস্তাব মোটেই ন্যায়সংগত নয়। আমি ওঁর চাইতে রূপবান ও বিদ্বান, মনোহরার সঙ্গে আমার বয়সের ব্যবধানও কম, ওঁর ত্রিশ, আমার ষাট, আর দাদার পঁয়ষট্টি। আমি এখনই যোগ্যতর পাত্র, মহারাজের যৌবন পেলে তো কথাই নেই।

 বিভীতক ধমক দিয়ে বললেন, তুই চুপ কর মূর্খ। জ্যেষ্ঠের পূর্বে কনিষ্ঠের বিবাহ হতেই পারে না।

 যযাতি বললেন, রাজকন্যা, তোমার অভিমত কি? তুমি যাকে চাও তাকেই আমার যৌবন দেব। এই দুই ভ্রাতার মধ্যে কাকে যোগ্যতর মনে কর?

 মনোহরা বললেন, দুজনেই সমান।

 যযাতি বললেন, সুন্দরী, তুমি আমাকে বড়ই সমস্যায় ফেললে, এই বিভীতক আর হরীতকের মধ্যে আমিও কোনও ইতরবিশেষ দেখছি না। আচ্ছা, এক কাজ করলে হয় না? আমার দিকে একবার দৃষ্টিপাত কর।

 নিজের কুচকুচে কালো বাবরি চুলে হাত বুলিয়ে আর রাজকীয় মোটা গোঁফে চাড়া দিয়ে যযাতি বললেন, যৌবন তো আমার রয়েইছে, বেশ পরিপুষ্ট যৌবন, তা যদি দান না করে রেখেই দিই? আমিই যদি তোমাকে বিবাহ করি তা হলে কেমন হয় মনোহরা?