পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাঙ্গায়নী সুধা
১৯

তার আগে ফ্রেঞ্চ কনসলের ডিনারে শ্যাম্পেনও খেয়েছি, কিন্তু এই চাঙ্গায়নী সুধার কাছে সে সব লাগে না। ওঃ, কি চীজই বানিয়েছ জটাই বাবা! মিষ্টি টক নোনতা ঝাল, ঈষৎ তেতো, ঈষৎ কষা, সব রসই আছে, কিন্তু প্রত্যেকটি একবারে লাগসই। ঝাঁজও বেশ, বোধ হয় ইলেকট্রিসিটির জন্যে, পেটে গিয়ে চিনচিন করে শক দিচ্ছে। দাও হে আর এক হাতা।

 রামতারণ মুখুজ্যে বললেন, আমার আবার বাতের ব্যামো, ডায়াবিটিসও একটু আছে। চাঙ্গায়নী একটু খেলে বেড়ে যাবে না তো হে জটাধর?

 জটাধর বললেন, বাড়বে কি মশাই, একেবারে নির্মূল হবে, শরীরের সমস্ত ব্যাধি, মনের সমস্ত গ্লানি, হৃদয়ের যাবতীয় জ্বালা বেমালুম ভ্যানিশ করবে। মুখে হাঁ করুন তো, এক হাতা ঢেলে দিচ্ছি, ভক্তিভরে সেবন করুন। শ্রদ্ধয়া পেয়ং, শ্রদ্ধয়া দেয়ম্।

 —নাঃ, তুমি দেখছি বেজায় নাছোড়বান্দা, কিছু, আদায় না করে ছাড়বে না। নাও, পুরোপুরি একটা টাকাই নাও।

 বৃদ্ধ রামতারণ মুখুজ্যের সদ্‌দৃষ্টান্তে সকলেই উৎসাহিত হয়ে চাঙ্গায়নী সেবন করলেন। তিন হাতা খাবার পর বীরেশ্বর সিংগি কাঁদোকাঁদো হয়ে বললেন, জটাধরজী, আমার মনে সুখ নেই, বড় কষ্ট, বড় অপমান, বউটা হরদম বলে, বোকারাম হাঁদারাম ভ্যাবাগঙ্গারাম।

 জটাধর বললেন, আর একটু চাঙ্গায়নী খান বীরেশ্বরবাবু, সব দুঃখ ঘুচে যাবে। আপনি হলেন বীরপুংগব পুরুষসিংহ, কার সাধ্য আপনার অপমান করে! বোকারাম বললেই হল! দেখবেন আজ থেকে আর বলবে না, সবাই আপনাকে ভয় করবে।

 রামতারণ বললেন, ওহে জটায়ু পক্ষী, তোমার চাঙ্গায়নী সত্যিই