খাসা জিনিস। এই নাও দু টাকা, একটু বেশী করে দাও তো। গিন্নী কেবলই বলে, বাহাত্তুরে বেআক্কেলে বুড়ো, ভীমরতি ধরেছে। মাগী আমাকে ভালমানুষ পেয়ে গ্রাহ্যির মধ্যে আনে না, বড়লোকের বেটী বলে ভারী দেমাক। আরে বাপের কত টাকা আমার ঘরে এনেছিস? আজ বাড়ি গিয়ে দেখে নেব, বেশ একটু তেজ পাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।
জটাধর বললেন, এই চাঙ্গায়নীতে সৌরতেজ রদ্রতেজ ব্রহ্মতেজ সব আছে মুখুজ্যে মশাই। আপনি নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ, ঋষিদের বংশধর, আপনার পূর্বপুরুষরা সোমযাগ করতেন, কলসী কলসী সোমরস খেতেন। আপনার আবার তেজের ভাবনা! নিন, চায়ের পেয়ালা ভরতি করে দিলুম, চোঁ করে গলাধঃকরণ করে ফেলুন। পাঁচ ঢাকা দক্ষিণা—শ্রদ্ধয়া দেয়ং, শ্রদ্ধয়া পেয়ম্।
কালীবাবুর টি ক্যাবিনে যারা উপস্থিত ছিলেন তার সকলেই অল্পাধিক চাঙ্গায়নী সুধা পান করলেন। কিন্তু জিনিসটির প্রভাব সকলের উপর সমান হল না। কপিল গুপ্ত গম্ভীর হয়ে বিড়বিড় করে ম্যাকবেথ আবৃত্তি করতে লাগলেন। বীরেশ্বর সিংগি এবং আরও দুজন কচি ছেলের মতন খুঁতখুঁত করে কাঁদতে লাগলেন। দু-তিন জন মেজেতে শুয়ে পড়ে নিদ্রামগ্ন হলেন। অতুল হালদার দাঁড়িয়ে উঠে হাত নেড়ে থিয়েটারী সুরে বলতে লাগলেন, শাহজাদী সম্রাটনন্দিনী, মৃত্যুভয় দেখাও কাহারে? রামতারণ মুখুজ্যে বেঞ্চের উপর উবু হয়ে বসে তুড়ি দিয়ে রামপ্রসাদী গাইতে লাগলেন—
কালী, একবার খাঁড়াটা নেব;
তোমার লকলকে জিব কেটে নিয়ে মা,