পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বটেশ্বরের অবদান
২৫

রাত সাড়ে নটার সময় বটেশ্বর খেতে যাচ্ছেন এমন সময় টেলিফোন বেজে উঠল। রিসিভার ধরে বললেন, কাকে চান?... হাঁ, আমিই বটেশ্বর। আপনি কে?

 উত্তর এল— নমস্কার। আমি ডাক্তার সঞ্জীব চাটুজ্যে, আপনার কাছে একটু বিশেষ দরকার আছে। কাল সকালে আটটার সময় যদি যাই আপনার অসুবিধা হবে না তো?

 বটেশ্বর বললেন, না না, আপনি আসতে পারেন। কি দরকার বলুন তো?

 —সাক্ষাতেই সব বলব সার। আচ্ছা, নমস্কার।

 ডাক্তার সঞ্জীব চাটুজ্যের নাম বটেশ্বর শুনেছেন। বছর দুই হল বিলাত থেকে ফিরেছেন, বয়স বেশী নয়, খুব নাকি ভাল সার্জন, বেশ পসার হয়েছে।

 পরদিন সকালে সঞ্জীব ডাক্তার এসে বললেন, গুড মর্নিং সার, আপনার মহামূল্য সময় আমি নষ্ট করব না, দশ মিনিটের মধ্যেই বক্তব্য শেষ করব। ওঃ কি আশ্চর্য আপনার ক্ষমতা! ‘প্রগামিণী’ পত্রিকায় ‘কে থাকে কে যায়’ নামে যে গল্পটি লিখছেন তার তুলনা নেই, দেশ সুদ্ধ লোক মুগ্ধ হয়ে গেছে। শরৎ চাটুজ্যে তারাশংকর বনফুল প্রবোধ সাণ্ডেল সবাইকে কাত করে দিয়েছেন মশাই।

 বটেশ্বর সহাস্যে বললেন, আপনার তো খুব প্র্যাকটিস শুনতে পাই, আমার লেখা পড়বার সময় পান কি করে?

 —সময় করে নিতে হয় সার, না পড়লে যে চলে না। সর্বত্র এই গল্পটির কথা শুনি, আমাদের মেডিক্যাল ক্লাবে পর্যন্ত। সেদিন একটি বৃদ্ধ লোকের হার্নিয়া অপারেশন করছি, অ্যানিসথেটিকের ঝোঁকে তিনি হঠাৎ বলে উঠলেন— কি খাসা মেয়ে অলকা, জিতা রহো অলকা! আমার আত্মীয়স্বজন বন্ধুর দল তো আপনার অলকার জন্যে খেপে