পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডম্বরু পণ্ডিত
৪৩

 কাশীরাজ বিতর্দন প্রীত হয়ে বললেন, বাঃ, অতি সুন্দর প্রশস্তি। কোষপাল, এই বিপ্রকে এক শত স্বর্ণমুদ্রা দাও।

 ডম্বরু মাথা নেড়ে বললেন, না মহারাজ, নির্বোধ আত্মগর্বী লোকের দান আমি নিতে পারি না।

 আশ্চর্য হয়ে রাজা বললেন, নির্বোধ আত্মগর্বী বলছ কাকে?

 —আপনাকে। আমার প্রশস্তিতে যে উৎকট অত্যুক্তি আছে তা আপনি অম্লানবদনে মেনে নিয়েছেন।

 অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে বিতর্দন বললেন, নির্বোধ আত্মগর্বী তুমি নিজে। যদি ব্রাহ্মণ না হতে তবে ধৃষ্টতার জন্য তোমাকে শূলে চড়াতাম। কোষপাল, এক রৌপ্যমুদ্রা দিয়ে এই গণ্ডমূর্খকে বিদায় কর।

 মুদ্রা না নিয়েই ডম্বরু কাশীরাজসভা ত্যাগ করলেন। তার পর বহু দিন পর্যটন করে বৎসরাজধানী কৌশাম্বী নগরীতে উপস্থিত হলেন এবং বৎসরাজ পুরঞ্জয়ের সভায় গিয়ে পূর্ববৎ প্রশস্তি পাঠ করলেন।

 পুরঞ্জয় বললেন, অতি উত্তম রচনা। কোষপাল, এই পণ্ডিতপ্রবরকে এক শত স্বর্ণমুদ্রা দাও।

 ডম্বরু পূর্ববৎ মাথা নেড়ে বললেন, না মহারাজ, নির্বোধ আত্মগর্বীর দান আমি নিতে পারি না, গুরুদেবের নিষেধ আছে। আমার প্রশস্তিতে যে উৎকট চাটুবাক্য আছে তা আপনি বিনা দ্বিধায় মেনে


 ক্রুদ্ধ হয়ে পুরঞ্জয় বললেন, ওহে দ্বিজগদর্ভ, দেবতা রাজা আর প্রণয়িনীর স্তুতিতে অতিরঞ্জন থাকেই, তা অলংকারশাস্ত্রসম্মত। আমি তোমার কবিত্বই বিচার করেছি, সত্যাসত্য গ্রাহ্য করি নি।