পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডম্বরু পণ্ডিত
৪৫

তিনি মালব রাজ্যে উপস্থিত হলেন। শিপ্রা নদীর তীরে এসে ডম্বরু ভাবতে লাগলেন, অহো দূরদৃষ্ট! রাজাদের পরীক্ষার জন্য আমি যে উপায় অবলম্বন করেছিলাম তা বিফল হয়েছে, দুই রাজা নির্বোধ প্রতিপন্ন হয়েছে, তৃতীয় রাজা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অকারণে আমার প্রতি বিমুখ হয়েছেন। এখন কি করা যায়? হে দেবী সরস্বতী, আমাকে রক্ষা কর।

 নদীতীরে উপবিষ্ট হয়ে ডম্বরু ব্যাকুল মনে বাগ্‌দেবীকে ডাকতে লাগলেন। সহসা শুনতে পেলেন, মধুর কণ্ঠে কে বলছে— দ্বিজবর, আপনি কি বিপদাপন্ন?

 চমকিত হয়ে ডম্বরু দেখলেন, এক সদ্যঃস্নাতা সিক্তবসনা সুন্দরী তাঁর সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। দণ্ডবৎ হয়ে প্রণাম করে ডম্বরু বললেন, ভগবতি ভারতি দেবি নমস্তে! আমাকে রক্ষা কর।

 বীণানিক্বণের ন্যায় হাস্য করে সুন্দরী বললেন, দেবী টেবী নই, আমি সামান্যা শিল্পিনী। আমার নাম শিলীন্ধ্রী, রাজপুরীর অঙ্গনাদের জন্য পুষ্পালংকার রচনা করে জীবিকা নির্বাহ করি। নদীতে স্নান করে উঠে দেখলাম আপনি কাতরোক্তি করছেন। দয়া করে বলুন কি হয়েছে।

 ডম্বরু বললেন, আমি বৃহস্পতিকল্প আচার্য রোহিতের প্রিয় শিষ্য পণ্ডিত ডম্বরু বিশ্ববিদ্যোদধি। নিখিল শাস্ত্রে পারদর্শী হয়ে সম্প্রতি গুরুর আশ্রম থেকে হয়েছি। তিনি বলেছেন, বৎস, তুমি বিদ্যায় পরিপ্লুত হয়েছ, এখন কোনও নৃপতিকে তুষ্ট করে তাঁর সভাকবি বা সভাপণ্ডিত হও, কিন্তু নির্বোধ আর আত্মগর্বী লোকের সংশ্রবে থেকো না, তাদের দানও নিও না। আমি একে একে কাশীরাজ বৎসরাজ ও দশার্ণরাজের সকাশে উপস্থিত হয়ে তাঁদের পরীক্ষা করলাম। কিন্তু দেখলাম প্রথম দুই রাজা নির্বোধ আত্মগর্বী, এবং