পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডম্বরু পণ্ডিত
৪৭

 ডম্বরুকে উপদেশ দিতে দিতে কিছু দূর তাঁর সঙ্গে গিয়ে শিলীন্ধ্রী বললেন, বামে ওই কুঞ্জবনের মধ্যে আমার গৃহ। দক্ষিণের ওই পথ রাজভবনের সিংহদ্বারে শেষ হয়েছে, আপনি সোজা চলে যান।

 শিলীন্ধ্রী প্রণাম করে বিদায় নিলেন।


মালবরাজ বিক্রমাদিত্য তাঁর রাজধানী অবন্তী অর্থাৎ উজ্জয়িনীর সভা অলংকৃত করে বসে আছেন। দৈনিক রাজকার্য তিনি প্রাতঃকালীন সভাতেই সম্পন্ন করে থাকেন, এখন এই সান্ধ্যসভায় চিত্তবিনোদনের জন্য সভাসদ্বর্গের সহিত মিলিত হয়েছেন।

 রুক্ষকেশ মলিনবেশ ধূলিধূসরদেহ ডম্বরু রাজসভায় প্রবেশ করলেন, ব্রাহ্মণ দেখে কেউ তাঁকে বাধা দিল না। রাজার সম্মুখে এসে আশীর্বাদের ভঙ্গীতে করতল বিন্যস্ত করে তিনি দাঁড়িয়ে রইলেন, তাঁর বাক্যস্ফূর্তি হল না।

 রাজা বললেন, ব্রাহ্মণ, আপনাকে অত্যন্ত অবসাদগ্রস্ত দেখছি। আপনি হস্ত পদ মুখ প্রক্ষালন করুন, দুগ্ধপান করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করুন, তার পর সুস্থ হলে আপনার বক্তব্য বলবেন। প্রতিহারী, এই বিপ্রকে বিশ্রামকক্ষে নিয়ে গিয়ে সেবার ব্যবস্থা কর।

 ডম্বরু বললেন, মহারাজ, আমি সংকল্প করেছি, আমার বক্তব্য শুনে যদি আপনি প্রসন্ন হন তবেই জলস্পর্শ করব। অতএব যা বলছি অবধান করুন—

মহাবল মহামতি বিক্রম ভূপতি,
তব রাজ্যে প্রজাগণ সুখে আছে অতি।