পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

এল। মহিলাদের একজনের বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি, আর একজনের বাইশ-তেইশ। দুজনেই অসাধারণ সুন্দরী, যদিও চোখ আর নাক একটু মঙ্গোলীয় ছাঁদের।

 বীরেন দত্ত পরিচয় করিয়ে দিল—ইনি হচ্ছেন কোমল গুপ্তর শাশুড়ী ঠাকরুন মিসিস মায়াবতী মর্দরাজ, আর ইনি সুকোমলের স্ত্রী মিসিস মোহিনী গুপ্ত। আমাদের আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে, এঁরা অনেক রকম খাবার তৈরি করলেন কিনা।

 ইলা ফিসফিস করে বলল, শীতুমামা, এই মায়াবতীই আপনার সেই তিনি নাকি?

 শীতুমামা বললেন, চুপ চুপ।

 নিকুঞ্জ ঘোয জিজ্ঞাসা করলেন, কই, মেজর গুপ্ত এলেন না?

 মধুর কণ্ঠে মোহিনী গুপ্ত বললেন, সুকোমল? তার কথা আর বলবেন না, পুওর ফেলো। কোথায় উধাও হয়েছে কিছুই জানি না।

 আঁতকে উঠে ইলা ফিসফিস করে বলল, কি সর্বনাশ!

 মায়াবতী বললেন, মিলিটারী সার্ভিসের মতন ওঁচা চাকরি আর নেই, হঠাৎ একটা টেলিগ্রাম পেয়ে কিছু না জানিয়েই চলে গেছে। আপনারা খেতে বসে যান, নয়তো সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। মোহিনী আর আমি পরিবেশন করছি।

 বীরেন দত্ত বলল, শীতুমামা, সব জিনিস নির্ভয়ে খেতে পারেন। আপনি মন্ত্র নিয়েছেন, নিষিদ্ধ মাংস এখন আর খান না, তাই এঁরা চিকেন বাদ দিয়েছেন। কাটলেট ফ্রাই পাই চপ সিককাবাব সবই পবিত্র ভেড়ার মাংসে তৈরী, এঁদের স্পেশিয়ালিটিই হল ভেড়া। হেঁ হেঁ হেঁ, এঁরা কামরূপ-কামিখ্যের মহিলা কিনা।

 ইলা বলল, ওরে মা রে!

 নিকুঞ্জ ঘোষ বললেন, কই, আপনারা কিছু নিলেন না?