পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মহারাষ্ট্রে যাঁহারা গণকের ব্যবসায় অবলম্বন করেন, তাঁহাদিগকে জোশী বলা হয়। সদ্বংশজাত যে কোনও মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ এই বৃত্তি অবলম্বন করিতে পারেন। এদেশে গণক ও দৈবজ্ঞেরা যেরূপ অপেক্ষাকৃত হীনশ্রেণীভুক্ত বলিয়া পরিগণিত হন, মহারাষ্ট্র দেশে সেরূপ হন না। গোপাল রাও ও তাঁহার ভাবী শ্বশুর গণপৎ রাও—ইঁহারা উভয়েই পুরুষানুক্রমিক “জোশী” ছিলেন। গোপাল রাও বোম্বাই নগরীর ৭০ মাইল ঈশানকোণস্থিত সঙ্গমনের নামক স্থানের অধিবাসী ছিলেন বলিয়া তাহাকে “সঙ্গমনেরকর” বলিত। গোপাল রাও অদ্ভুত প্রকৃতির লোক ছিলেন। তাঁহার ন্যায় অব্যবস্থিতচিত্ত ব্যক্তি অতি বিরল দেখিতে পাওয়া যায়। তিনি প্রথমে ব্রাহ্ম, (আনন্দী বাঈর মৃত্যুর) পরে খৃষ্টান এবং শেষে পুনর্বার প্রায়শ্চিত্তপূর্ব্বক হিন্দু সমাজে প্রবেশ করেন। খৃষ্টধর্ম্মপরিগ্রহ করিয়াও তিনি স্বীয় যজ্ঞোপবীত পরিত্যাগ করেন নাই! সে যাহা হউক, গ্রাম্য পাঠশালায় মারাঠী লেখাপড়া শেষ করিয়া তিনি যখন ইংরাজী শিক্ষার জন্য নাশিকে গমন করেন, সেই সময়ে তাঁহাকে একটি ষড়্‌-বৎসর-বয়স্কা বালিকার পাণিপীড়ন করিতে হয়। বালিকা-বধূ শ্বশুরালয়ে আসিয়া দেশীয় প্রথানুসারে গৃহকর্ম্মে মনোনিবেশ করায় গোপাল রাও অতীব অসন্তুষ্ট হন। তাঁহার জননী বধূকে গৃহকর্ম্ম করিবার আদেশ করিলে, তিনি জননীর সহিত কলহ করিতেন। তাঁহার মতে যৌবনে পদার্পণ করিবার পূর্ব্বে বধূগণকে গৃহকর্মে বাধ্য করা নিতান্ত অনুচিত। তিনি স্ত্রীশিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন ও স্বীয় স্ত্রীকে সামান্য লেখাপড়াও