পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
আনন্দী বাঈ

গোপাল রাও নব বধূকে “আনন্দী বাঈ” নাম প্রদান করিলেন। তদবধি যমুনা ঐ নামে সর্ব্বত্র পরিচিত হইল।

 অতঃপর গণপৎ রাওয়ের অনুরোধক্রমে গোপাল রাও শ্বশুরগৃহেই বাস করিতে লাগিলেন। পূর্ব্বসংকল্প অনুসারে তিনি আনন্দী বাঈর পাঠের জন্য কতিপয় মারাঠী পুস্তক আনিয়াছিলেন। লেখা পড়ার প্রতি আনন্দী বাঈর পূর্ব্বাবধি বিরাগ ছিল। সুতরাং পাঠ্য পুস্তকগুলি প্রায় যেখানকার সেইখানেই পড়িয়া থাকিত। গণপৎ রাও স্ত্রীশিক্ষার বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি তাহার বন্ধুগণের দ্বারা স্বীয় অভিপ্রায় জামাতাকে জ্ঞাপন করিলেন। কিন্তু গোপাল রাও কাহারও অনুরোধ পালন করিবার লোক ছিলেন না। যিনি তাঁহাকে বুঝাইতে গিয়াছিলেন, গোপাল রাও তাহাকে যে উত্তর দিয়া বিদায় করিলেন, তাহা শিষ্টাচার-সম্পন্ন বিজ্ঞ জনের মুখে কখনও শোভা পায় না। ফলতঃ তিনি অদ্ভুত প্রকৃতির লোক ছিলেন। নানা কার্য্যে তাঁহার এই অদ্ভুত প্রকৃতির পরিচয় পাওয়া যাইত। তিনি বিবাহের সপ্তাহ দুই পরেই একদিন অতি সামান্য কারণে ধৈর্য্যচ্যুত হইয়া একখণ্ড কাষ্ঠ দ্বারা নববধূকে এরূপ প্রহার করিয়াছিলেন যে, তাহার যন্ত্রণায় কয়েক দিন পর্য্যন্ত আনন্দী বাঈকে কাতর থাকিতে হইয়াছিল! যিনি স্ত্রীশিক্ষার অতীব পক্ষপাতী ও বালিকা-বধূর শ্বশুরালয়ে অবস্থানপূর্ব্বক গৃহকর্ম্ম করিবার ঘোর বিরোধী ছিলেন, তাঁহার এরূপ নিষ্ঠুরতা সত্য সত্যই অতীব বিস্ময়কর।

 বিবাহের পর আট মাস গোপাল রাও শ্বশুরমন্দিরে ছিলেন।