পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
আনন্দী বাঈ

অবস্থানকালেও গোপাল রাও স্ত্রীর সাহসিকতা-বর্দ্ধনের জন্য বিবিধ উপায়ের অবলম্বন করিয়াছিলেন। আনন্দী বাঈকে একাকিনী মিশনরী স্কুলে পড়িতে পাঠাইবারও তাঁহার ইহাই উদ্দেশ্য ছিল। তথা হইতে কল্যাণ নগর দূরবর্ত্তী ছিল না বলিয়া আনন্দী বাঈর পিত্রালয়গমনের সুযোগ ঘন ঘন উপস্থিত হইত। গোপাল রাও তাঁহাকে প্রায়ই একাকিনী পিত্রালয়ে গমন করিবার আদেশ দিতেন। প্রথম প্রথম তাঁহার নির্দেশক্রমে একজন ভৃত্য স্টেশন পর্যন্ত আনন্দী বাঈর সঙ্গে গিয়া তাঁহাকে টিকিট কিনিয়া দিত, গোপাল রাও তাহাও নিষিদ্ধ করিয়া দিলেন। তখন হইতে আনন্দী বাঈকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও সম্পূর্ণ একাকিনী কল্যাণে গমনাগমন করিতে হইত।

 ইহার পর গোপাল রাও আনন্দী বাঈর মাতামহীকে কল্যাণে পাঠাইয়া দিয়া স্বয়ং তিন মাসের অবকাশ-গ্রহণ-পূর্ব্বক উত্তর ভারত-পরিভ্রমণে চলিয়া গেলেন। চতুর্দ্দশবর্ষীয়া আনন্দী বাঈকে একাকিনী বোম্বাইয়ে থাকিতে হইল। এই সময়ে তিনি স্কুলবোর্ডিঙেই বাস করিতেন এবং প্রত্যহ দুই বেলা গোপাল রাওয়ের প্রথমা পত্নীর ভ্রাতার বাসায় গিয়া ভোজন করিয়া আসিতেন। এইরূপ গমনাগমন কালে ইতর লোকে তাঁহাকে পথিমধ্যে নিতান্ত বিরক্ত করিত। পরিশেষে দুইজনের বাক্যবাণ সহ্য করিতে অসমর্থা হইয়া তিনি দেড়মাস পরে পিত্রালয়ে প্রস্থান করিলেন।

 উত্তর ভারত হইতে প্রত্যাবর্ত্তনের পর গোপাল রাও দেখিলেন যে, পুনঃ পুনঃ পিত্রালয়ে গমন করিতে হয় বলিয়া আনন্দী বাঈর শিক্ষায় ব্যাঘাত জন্মিতেছে। কাজেই তিনি দূরদেশে বদলি হইবার