পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
আনন্দী বাঈ

পত্র-ব্যবহার হইয়াছিল, তাহা সেই সময়ে “ক্রিশ্চান রিভিউ” নামক আমেরিকার এক মাসিকপত্রে প্রকাশিত হয়। ঐ পত্র দৈবক্রমে শ্রীমতী কার্পেণ্টার নাম্নী এক সদয়হৃদয় রমণীর হস্তগত হওয়ায় আনন্দী বাঈর জীবন-স্রোত অন্য মুখে ধাবিত হইল। এই রমণী রোশেল নগরে বাস করিতেন। তিনি একদিন জনৈক দন্ত চিকিৎসকের গৃহে ঐ মাসিক পত্র খানি ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় আবর্জ্জনারাশির মধ্যে দেখিতে পান। কৌতূহলাক্রান্ত চিত্তে তিনি উহা পাঠ করিতে গিয়া যাহা দেখিলেন, তাহাতে তাঁহার হৃদয়ে দুঃখের সঞ্চার হইল। ঐ সকল পত্র হইতে তিনি গোপাল রাওয়ের অবস্থার ও মিশনরিদিগের ব্যবহারের বিষয় অবগত হন এবং আনন্দী বাঈকে সহানুভূতিসূচক পত্র লিখিয়া উচ্চ শিক্ষালাভ বিষয়ে উৎসাহিত করিবেন, সংকল্প করেন। এই সংকল্প কার্য্যে পরিণত হইবার পক্ষে আর একটি দৈবঘটনা অনুকূল হইল।

 পরদিন প্রাতঃকালে শ্রীমতী কার্পেণ্টারের “আমী” নাম্নী নবমবর্ষীয়া কন্যা শয্যা ত্যাগ করিয়াই তাঁহাকে গিয়া বলিল -“মা। আমি স্বপ্নে দেখিলাম, তুমি হিন্দুস্থানে কাহাকে পত্র লিখিতেছ।” এই বালিকা আশিয়া খণ্ডের মানচিত্র কখনও দেখে নাই এবং শ্রীমতী কার্পেণ্টারও স্বীয় সংকল্পের বিষয় ইহার পূর্ব্বে কাহারও নিকট ঘূণাক্ষরে ব্যক্ত করেন নাই। সুতরাং বালিকার এই স্বপ্ন দৈবসঙ্কেত বলিয়া তাঁহার মনে হইল। তিনি কালবিলম্ব না করিয়া কোহ্লাপুরের ঠিকানায় আনন্দী বাঈকে সহানুভূতি ও উৎসাহপূর্ণ একখানি পত্র লিখিলেন। আমেরিকার সম্বন্ধে আনন্দী বাঈর জ্ঞানবৃদ্ধির জন্য