পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
আনন্দী বাঈ

সন্দেহের উদ্ভব হওয়াতেও তাহার বিশেষ কষ্টের কারণ হইয়াছিল। তাঁহার কয়েকখানি পত্রেই কলিকাতার নিন্দা দেখিতে পাওয়া যায়। একখানি পত্রে তিনি লিখিতেছেন,—

 “কলিকাতা আমাদিগের সহিষ্ণুতার পরীক্ষা—অতি কঠোর পরীক্ষা করিতেছে, একথা আপনাকে (শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে) পূর্ব্বেই জানাইয়াছি। আমার স্বাস্থ্য এতদূর খারাপ হইয়াছে যে, একবার যাহা খাই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও তাহা হজম হয় না। জ্বর ও মাথা ধরা এখন প্রাত্যহিক ঘটনায় পরিণত হইয়াছে। এ স্থান ভয়ানক গরম। বর্ষা আরম্ভ হইয়াছে, তথাপি গরম কমিতেছে না। আমার সর্ব্বাঙ্গে ফোড়া হওয়ায় বড়ই কষ্ট পাইতেছি।

 “এখানকার লোকে আমাদিগকে বড়ই উত্ত্যক্ত করিয়া তুলিয়াছে। এখানকার ইংরাজদিগেরও হৃদয়ে দয়া নাই। আমাদের একজন প্রতিবেশিনী জার্ম্মান রমণীও আমার সম্বন্ধে নানা প্রকার কু-কথা রটাইতে ত্রুটী করে নাই। আমি ধর্ম্ম-পত্নী নহি, সমস্ত রাত্রি স্বামীর সহিত ঝগড়া করি,—প্রভৃতি গুজব তুলিয়া সে আনন্দ লাভ করে। আমরা পথে বাহির হইলে ইউরোপীয়েরা আমাদের দিকে এক দৃষ্টে চাহিয়া থাকে, আমার দিকে অঙ্গুলি-নির্দ্দেশ-পূর্ব্বক আমাদের ব্যবহারের সমালোচনায় প্রবৃত্ত হয়। দেশীয়দিগের কথা বলাই বাহুল্য। আমাদিগকে প্রকাশ্য পথে গমন করিতে দেখিলে, তাহারা গাড়ী থামাইয়া আমাদিগের দিকে তাকাইতে থাকে। কেহ কেহ বা আমাদিগের নিকটবর্ত্তী হইলে, গাড়োয়ানকে ধীরে ধীরে গাড়ী চালাইতে অনুমতি করিয়া আমাদের প্রতি লক্ষ্য স্থাপন