পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আনন্দী বাঈ

পত্রখানি নিকটেই কোথায় পড়িয়া গেল! তাঁহারা তৎক্ষণাৎ অনুসন্ধান আরম্ভ করিলেন। কিন্তু সমস্ত পথে খুঁজিয়াও উহা পাওয়া গেল না, চক্ষের পাতা ফেলিতে না ফেলিতে অদৃশ্য হইয়া গেল! এই ঘটনায় সহরে যে হুলস্থূল পড়িয়া যায়, তাহা আপনি অনুভবেই বুঝিতে পারিবেন—আমি তাহা লিখিয়া বর্ণনা করিতে অসমর্থ। এই ব্যাপারে ইতিকর্ত্তব্যতা-নির্দ্ধারণের জন্য উপরিতন রাজপুরুষেরা সমবেত হইয়া সভা করিয়াছিলেন। চারিদিকে অনুসন্ধানের জন্য পুলিশ প্রেরিত হইয়াছিল। রাস্তার সমস্ত লোকের বস্ত্রাদি পরীক্ষা করাইতেও তাঁহারা ত্রুটী করেন নাই। সর্ব্বপ্রকার উপায় অবলম্বিত হইল। কিন্তু কিছুতেই নষ্ট পত্রের পুনরুদ্ধার হইল না! আমার স্বামীকে ও তাঁহার অনুচরকে পুলিশের হাতে দেওয়া হইল। ভিন্ন ভিন্ন রাজপুরুষেরা তাঁহাদিগের জোবানবন্দী গ্রহণ করিলেন। আমার স্বামীকে অস্থায়িভাবে পদচ্যুত করা হইল। সেদিনকার বিপদের কথা আমি জীবনে বিস্মৃত হইব না।”

 এই দুর্ঘটনার পর আনন্দী বাঈ স্বামীকে রেঙ্গুনজাপান হইয়া আমেরিকায় গমনের পরামর্শ দান করিলেন। উত্তর ভারতের সর্ব্বত্র রমণীগণের অবগুণ্ঠন ও কঠোর অবরোধপ্রথা প্রচলিত থাকায় ঐ প্রদেশে থাকিয়া তাঁহাদিগের চাকরী করিবার ইচ্ছা ছিল না। দক্ষিণ ভারতে গমন করিলেও আনন্দী বাঈর শিক্ষার ব্যাঘাত ঘটিবার সম্ভাবনা ছিল। এই সকল কারণে দেশত্যাগেই তাহারা কৃতসংকল্প হইলেন। কিন্তু ১৮৮২ সালের ১লা এপ্রিল গোপাল রাও পুনরায় চাকরী পাইয়া শ্রীরামপুরে প্রেরিত হওয়ায় সে সংকল্প