পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অধ্যায়
২৯

আমাদিগের দেশের একটি প্রধান অভাব দূর করিবার জন্য আমি নিতান্ত ব্যগ্র হইয়াছি। স্বামীর উপদেশ-গুণেই যে এ বিষয়ে আমার এইরূপ প্রবল আগ্রহ জন্মিয়াছে, একথা আমি স্বীকার করিতে বাধ্য। তাঁহার উপদেশ আমার হৃদয়ে এরূপ দৃঢ়ভাবে মুদ্রিত হইয়াছে যে, তাহা আর কিছুতেই অপনোদিত হইবার নহে। আমার এ সংকল্প কিছুতেই বিচলিত হইবে না।”

 এইরূপ মহৎ উদ্দেশ্যের দ্বারা পরিচালিত হইয়া এই মহারাষ্ট্রীয় দম্পতী স্বদেশ-পরিত্যাগ-পূর্ব্বক আমেরিকা গমনের সংকল্প করিয়াছিলেন। কেবল তাহাই নহে, পাশ্চাত্য ও দেশীয় চিকিৎসা-বিজ্ঞানের ঐক্যবিধান-পূর্ব্বক দেশের বর্ত্তমান অবস্থার উপযোগী চিকিৎসা-প্রণালীর প্রবর্ত্তন-কল্পে চেষ্টা করাও আনন্দী বাঈর অন্যতম লক্ষ্য ছিল। অর্থাভাবে তাঁহাদিগের সংকল্প অনেক দিন কার্য্যে পরিণত হয় নাই। কলিকাতায় আসিয়া গোপাল রাওয়ের কর্ম্মচ্যুতি ঘটিলে, তিনি স্বদেশে ফিরিয়া না গিয়া আমেরিকা যাত্রার আয়োজন করিতেছিলেন। কিন্তু কর্ত্তৃপক্ষ তাহাকে নির্দ্দোষ জানিয়া অল্পদিনের মধ্যেই পুনরায় স্বপদে প্রতিষ্ঠিত করায় তাঁহার আমেরিকা যাত্রা কিছু দিনের জন্য স্থগিত রহিল।

 শ্রীরামপুরে কিছুদিন অবস্থানের পর গোপাল রাও সস্ত্রীক আমেরিকা গমনের জন্য কর্ত্তৃপক্ষের নিকট দুই বৎসরের অবকাশ প্রার্থনা করিলেন। তিনি ভাবিয়াছিলেন, পত্নীর সহিত তাঁহার আমেরিকায় থাকিবার সুবিধা হইলে, দুই বৎসরে আনন্দী বাঈর চিকিৎসা-বিজ্ঞান শিক্ষা পরিসমাপ্ত হইবে। কিন্তু রাজপুরুষেরা